বারানসি, ৩ নভেম্বর : উত্তরপ্রদেশের ভোটার তালিকায় ব্যাপক ডুপ্লিকেট নাম পাওয়া গেছে, যা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এক রাজ্যস্তরের নিরীক্ষায় দেখা গেছে, বেশ কিছু জেলা ও ব্লকে একাধিকবার ভোটারদের নাম তালিকায় উপস্থিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ লাখ নাম যাচাইয়ের পর মুছে ফেলা হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের পরিদর্শনে দেখা গেছে, পিলিভিট, বারানসি, বিজনৌর এবং হাপুরের মতো কিছু জেলায় সবচেয়ে বেশি ডুপ্লিকেট নাম রয়েছে। পিলিভিটের পুরানপুর ব্লকে একাই প্রায় ৯৭,০০০ ভোটারের নাম পুনরায় তালিকাভুক্ত হয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, এই অনিয়মগুলো সঠিক করার জন্য একটি ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হবে, যা প্রায় বিশেষ ইনটেনসিভ রিভিশন এর মতো হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনগুলোকে ইতিমধ্যে ব্লক অনুযায়ী ডুপ্লিকেট ভোটারের তালিকা পাঠানো হয়েছে এবং সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিশন অনুমান করছে, যাচাইয়ের পর প্রায় ৫০ লাখ নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে।
এই ডুপ্লিকেট নামগুলো শনাক্ত করা হয়েছে একটি ম্যাচিং প্রক্রিয়া দ্বারা, যেখানে ভোটারের নাম, তাদের পিতার নাম এবং লিঙ্গের মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। রাজ্যের ৮২৬টি উন্নয়ন ব্লকের মধ্যে ১০৮টি ব্লকে ৪০,০০০ এর বেশি ডুপ্লিকেট নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডুপ্লিকেট নাম পাওয়া গেছে বারানসির অরাজিলাইন ব্লকে, যেখানে ৭৭,৯৪৭টি নাম পুনরায় তালিকাভুক্ত হয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের সৈদপুরে ৭১,১৭০টি, পিন্ডরায় ৭০,৯৪০টি এবং জৌনপুরের শাহগঞ্জ সোন্ধীতে ৬২,৮৯০টি ডুপ্লিকেট নাম রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই অস্বচ্ছতা যথাসময়ে সমাধান না হয়, তবে আসন্ন নির্বাচনগুলোর স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নির্বাচন কমিশন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের দ্রুত যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এবং রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে নির্বাচনগুলি সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গত সপ্তাহে, নির্বাচন কমিশন দ্বিতীয় পর্বের এসআইআর অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে, যার আওতায় ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে উত্তরপ্রদেশও অন্তর্ভুক্ত। এই রিভিশন প্রক্রিয়া নির্বাচন বা প্রয়োজনমতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে আইনে বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি ও ডুপ্লিকেট নাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২২ বছর আগে ২০০৩ সালে উত্তরপ্রদেশে শেষবার ভোটার তালিকা রিভিশন করা হয়েছিল।

