কলকাতা, ১১ অক্টোবর – আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে। বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে “দুর্নীতির অভিযোগ ফাঁস” করার হুমকি দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মন্তব্যের ভিডিও ক্লিপ এবং অনুবাদ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন, এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতার সিইও দফতরের এক শীর্ষ কর্তা।
ঘটনাটি ঘটে এক প্রশাসনিক বৈঠকে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পান্ত এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মনোজ আগরওয়াল রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের ‘হুমকি’ দিচ্ছেন। এরপরই তিনি মন্তব্য করেন, “উনি যদি সীমা ছাড়ান, আমি ওঁর দুর্নীতির কথা প্রকাশ করে দেব।” ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী এমন সরাসরি অভিযোগ তুললেন কোনো রাজ্য নির্বাচন অধিকর্তার বিরুদ্ধে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, এই ধরণের গুরুতর অভিযোগের প্রমাণসহ প্রতিবেদন লোকপাল দফতরে জমা দিতে হয়। সিইও দফতর সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের নির্দেশে আজই সেই ভিডিও ক্লিপ ও বাংলার অনুবাদ পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
এই ঘটনার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে বিজেপির বিধায়করা, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে, নির্বাচন কমিশনে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে FIR দায়েরের দাবিও জানানো হয়েছে তাতে।
বিজেপির অভিযোগ, “একজন মুখ্যমন্ত্রী যদি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিককে প্রকাশ্যে হুমকি দেন, তাহলে সেটি পুরো প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সঙ্কটে ফেলে। এটি শুধুই রাজনৈতিক মন্তব্য নয়, বরং গণতন্ত্রের ভিত্তিকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা।”
বিজেপি জানিয়েছে, সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যদি মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ প্রকাশ না করেন, তবে তারা নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে বসবে।
রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই এই ঘটনা ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন দেখার, নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজের মন্তব্যের পক্ষে কী যুক্তি দেন।

