কানপুর, ৩০ এপ্রিল : লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বুধবার কানপুরে গিয়ে পহেলগাম জঙ্গি হামলায় নিহত শুভম দ্বিবেদীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শুভমের বাড়িতে পৌঁছেই শোকস্তব্ধ পরিবেশের সাক্ষী হন রাহুল। দেখা হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শুভমের স্ত্রী আইশান্যা দ্বিবেদী (৩১)। স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল, পাশে বসে সান্ত্বনা দেন। শুভমের বাবা সঞ্জয় দ্বিবেদীও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
সাক্ষাৎকালে আইশান্যা রাহুল গান্ধীর কাছে আবেদন জানান, যাতে শুভমকে সরকারিভাবে শহিদের মর্যাদা দেওয়া হয়। উত্তরে রাহুল আশ্বাস দেন, তিনি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখবেন এবং বিষয়টি সংসদেও উত্থাপন করবেন। রাহুল বলেন, “শুভমের আত্মবলিদান যেন মর্যাদা পায়, তার জন্য আমি যা যা করার দরকার, সব করব।” আইশান্যা জানান, হামলার আগে জঙ্গিরা শুভমের ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে এবং তারপরেই গুলি চালায়। রাহুল গান্ধী সেই বর্ণনা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করেন।
এক আবেগঘন মুহূর্তে সঞ্জয় দ্বিবেদী রাহুলকে প্রশ্ন করেন, “আপনিও তো এই বেদনা অনুভব করেছেন। আপনার ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে কি দেশের ভিতরে এভাবে হামলা হতো?” জবাবে রাহুল বলেন, “যদি আমার ঠাকুমা বেঁচে থাকতেন, তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৭১ সালের মতোই কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হতো। দেশের মাটিতে এমন হামলা ঘটত না।”
এদিকে, রাহুল গান্ধী নিজের মোবাইল থেকে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ফোনে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। রাহুল প্রায় ২৮ মিনিট সময় কাটান দ্বিবেদী পরিবারের সঙ্গে। তারপর কানপুরের চাকেরি বিমানবন্দর থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
পরবর্তীতে রাহুল গান্ধী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “আজ পহেলগামে কাপুরুষোচিত জঙ্গি হামলায় শহিদ শুভম দ্বিবেদীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলাম ও তাদের সান্ত্বনা দিলাম। এই শোকের সময়ে পুরো দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত এবং নিহত পরিবারগুলিকে ন্যায়বিচার দিতে হবে। এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী পক্ষ সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে এবং সংসদের বিশেষ অধিবেশন দাবি করেছে।”

