দূর্ঘটনায় মৃত ইটভাট্টা শ্রমিকের শিশু, দুর্বিষহ জীবন, সাহায্যের দাবি সিপিএমের

বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য

ধর্মনগর, ৪ মার্চ: ধর্মনগর যুবরাজনগর বিধানসভার মঙ্গলখালী এমবিআই ইটভাট্টার এক শ্রমিক পরিবারের চার বছরের শিশু পুত্র দুর্ঘটনার প্রাণ হারায়। এই দুর্ঘটনার পর মালিকপক্ষ এবং সরকারি পক্ষ কোন পক্ষ থেকেই এই সহায়হীন শ্রমিক পরিবারকে সাহায্য প্রদান করা হয়নি। ফলে চরম দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটছে পরিযায়ী ইটভাটা শ্রমিক পরিবারটি।

প্রসঙ্গত, ধর্মনগর মঙ্গলখালি এমবিআই ইট ইটভাটার শ্রমিক সূরজ চৌহান, বিহারের নালন্দা জেলার বাসিন্দা। স্ত্রী এবং ১ শিশু কন্যা ও ২ শিশু পুত্র সহ ভাই ভাতিজা নিয়ে এবছরই সে প্রথম ত্রিপুরার এমবিআই ইটভাটায় কাজ করতে আসে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা প্রায় ১০ টায় এম বি আই ইটভাটার অভ্যন্তরে মাটি বোঝাই গাড়ির ধাক্কায়, ইটভাটা শ্রমিক সূরজ চৌহা নের চার বছরের শিশু পুত্র সুরিয়া কুমার প্রচণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়। সাথে সাথেই শিশু পুত্রটিকে উত্তর ত্রিপুরা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। কিন্তু এই ব্যাপারে মালিক পক্ষ এবং সরকার পক্ষ কোন পক্ষই অসহায় পরিযায়ী শ্রমি ক পরিবারের পক্ষে দাঁড়ায় নি।এই সংবাদ পেয়ে সিআইটি ইউ এবং ত্রিপুরা ইটভাটা শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মনগর মহ কুমা কমিটির পক্ষ থেকে অমিতাভ দত্ত, নিরঞ্জন দেব নাথ, মাখন পাল, রতন রায় সহ সংগঠনের প্রতিনিধিদল মঙ্গলখালীতে ছুটে গিয়েছেন।

ইটভাটা শ্রমিকদের অবস্থান এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিআইটিইউ এবং এআই এলইউ ধর্মনগর মহকুমা কমিটি যৌথ ভাবে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি রাখে। সেগুলো হল, প্রতিটি ইটভাটায় শ্রম আইন এবং কারখানা আইন কঠোর ভাবে কার্যকর করতে হবে, ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের অস্থায়ী বাসস্থান বসবাসের উপযোগী এবং স্বাস্থ্য সম্মত করতে হবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের শিশু সন্তানদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যালয় শিক্ষার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, মৃত সুরিয়া কুমারের দুর্ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক কে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা গ্রহণ করতে হবে, মৃত সুরিয়া কুমারের পরিবার মোটর ভেহিকেল ক্লেইমস ট্রাইব্যুনাল থেকে অতিদ্রুত যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য সহানুভূতির সাথে সমস্ত রকম উদ্যোগ, আইনগত পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে হবে, সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিটি ইটভাটায় সফলভাবে স্বচ্ছ ভারত অভিযান কার্যকর করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *