গুয়াহাটি, ১৯ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : ৪৫ দিনের মাথায় ডিমা হাসাও জেলার অন্তৰ্গত উমরাংসোর তিন কিলো এলাকার কালামাটিতে প্লাবিত ‘১৯ নম্বর আসাম কয়লা কোয়ারি’ (কয়লা খাদান) থেকে সর্বশেষ পাঁচ শ্রমিকের মৃতদেহ আজ (বুধবার) উদ্ধার করা হয়েছে, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী এ খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘খাদান থেকে সম্পূর্ণ জল নিষ্কাষণের পর আজ উদ্ধারকারী দলগুলি অবশিষ্ট পাঁচটি দেহ উদ্ধার করেছে। তাঁদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এর সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উদ্ধার অভিযান।’
এদিকে এনডিআরএফ সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য উদ্ধারকৃত পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ উমরাংসো থানা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কয়লা খাদানে এনডিআরএফ-এর ইনস্পেক্টর আরকে সিঙের নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযান তত্ত্বাবধান করেছেন এসি মনোজকুমার রাণা। সামগ্রিকভাবে অভিযান মনিটরিং করেছেন এনডিআরএফ-এর প্রথম ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট এইচপিএস কাণ্ডারি সমেত সিএমও (ওজি) ড. মফি আপ করিম এবং এসি (ওয়ার্কস) মহম্মদ আরিফ জিয়া।
উল্লেখ্য, আজ প্রথমে এক শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। আরও চারজন খাদানে আবদ্ধ ছিলেন। পরবর্তীতে চার মৃতদেহ উদ্ধারের পর সব নয় (৯) শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি এক এবং ১১ জানুয়ারি তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল উদ্ধারকারী দল।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ৬ জানুয়ারি সকাল প্রায় ৯.০০টা নাগাদ ডিমা হাসাও জেলার অন্তৰ্গত অসম-মেঘালয় আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী উমরাংসো থানা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত ৩ কিলো এলাকায় অবস্থিত কালামাটি বস্তিতে প্রায় ৩০০ ফুট গভীর ‘১৯ নম্বর আসাম কয়লা কোয়ারি’-তে আচমকা বাইরে থেকে হড়কা বানের জল হু হু করে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়লে নয়জন শ্ৰমিক আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করতে ভারতীয় পদাতিক সেনা, বায়ুসেনা, নৌবাহিনী, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, আসাম রাইফেলস, ওএনজিসি সহ বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থাকে নামানো হয়েছিল।
কিন্তু ১১ তারিখ পর্যন্ত চার শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেও পাঁচ শ্রমিককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি নিয়োজিত অভিযানকারী সংস্থাগুলি। ফলে গত ১৮ জানুয়ারি ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনী সহ বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থা তাঁদের অভিযান বন্ধ করে ফিরে গিয়েছিল। পরবর্তীতে নামানো হয় এনডিআরএফ-এর প্রথম ব্যাটালিয়নকে। তাঁদের প্রচেষ্টায় আজ সব শ্রমিকের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
এদিকে কয়লা খাদানে নয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ধরে তাঁদের নিকট-আত্মীয়ের হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে এককালীন আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে বলে মরিগাঁওয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৮ জানুয়ারি উমরাংসোতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃত নয় শ্রমিকের নিকট-আত্মীয়দের হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে একাকালীন আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছিলেন রাজ্যের খনি ও খনিজ সম্পদ দফতরের মন্ত্রী কৌশিক রাই।