আগরতলা, ১১ ফেব্রুয়ারি: রাজ্য সরকার এবছর কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খারিফ মরশুমে ১৭ হাজার ৪৯৭.১০৯ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করেছে। ২৩ টাকা প্রতি কেজি দরে এই ধান ক্রয় করা হয়েছে। এতে সারা রাজ্যে ৮ হাজার ৯২২ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এসংবাদ জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, রাজ্য জুড়ে ১৯টি মহকুমার ৫১টি ধান ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে এই ধান ক্রয় করা হয়েছে। এতে রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই ৩৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা কৃষকদেরকে প্রদান করা সম্পন্ন হয়ে গেছে। শতাংশের নিরিখে ৮৮ শতাংশের বেশি কৃষকদের ব্যাঙ্ক খাতে অর্থরাশি প্রেরণ করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট ধান ক্রয়ের অর্থ শীঘ্রই প্রদান করা সম্পন্ন হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী জানান। তিনি জানান, খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে এবং কৃষি দপ্তরের সক্রিয় সহযোগিতায় গত ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে এই ধান ক্রয় প্রক্রিয়া চালু করা হয় যা সম্পন্ন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে।
খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে খারিফ ও রবি মরশুমে বছরে দু’বার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার কর্মসূচি শুরু হয়। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে রাজ্যে মোট ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৫৬.৮০৫ মেট্রিকটন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪৪৬. ১৩ কোটি টাকা। এরফলে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৪৯ জন কৃষক। খাদ্যমন্ত্রী জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে রাজ্যব্যাপী
এই ধান ক্রয় প্রক্রিয়া অনেকটাই সন্তোষজনক। রাজ্য সরকার কৃষক দরদী সরকার, কৃষকদের অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে শক্তিশালী করে তুলতে সরকারের এই প্রয়াস জারি থাকবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী তথা পরিবহনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আরও বলেন, সড়ক নিরাপত্তা, ভোক্তা সুরক্ষা এবং নেশার কুফল থেকে সমাজকে বাঁচাতে পরিবহন দপ্তর এবং খাদ্য দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এবং বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতায় রাজ্যব্যাপী জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ‘জাগৃতি’ কর্মসূচি পালন করা হয়। সারা রাজ্যের ২৫টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ইকফাই ইউনিভার্সিটি, আইন কলেজ, টিআইটি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। রাজ্যের প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন ছাত্রছাত্রী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। খাদ্যমন্ত্রী জানান, গোমতী জেলার উদয়পুর থেকে গত ১১ জানুয়ারি এই ‘জাগৃতি’ কর্মসূচি শুরু হয়। যার চূড়ান্ত পর্ব সম্পন্ন হয় ১০ ফেব্রুয়ারি আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন স্তরে পুরস্কারও প্রদান করা হয়। তিনি জানান, আগামীতে ‘জাগৃতি’ কর্মসূচিকে বিদ্যালয় স্তরে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিবহন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী, খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা সুমিত লোধ এবং খাদ্য দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা অভিজিৎ বিশ্বাস।