প্রসব যন্ত্রণায় কাতর সংকটাপন্ন রোগীর অবস্থা জানানো হয় নি পরিবারকে, মৃত্যুর পর দেড় লক্ষ টাকা বিল মিটিয়ে দিতে নার্সিং হোমের চাপ

কৈলাসহর, ৭ ডিসেম্বর : নার্সিং হোমে প্রসূতি মা ও সদ্যজাত সন্তানের মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। একদিকে স্ত্রী ও সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর চন্দ্র হালাম। নার্সিং হোমের মোটা অংকের বিল দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। তাঁর অভিযোগ স্ত্রী ও গর্ভস্থ সন্তানের অবস্থা আশঙ্কাজনক জেনেও নার্সিং হোম বিষয়টি চেপে গেছে। উল্টে এখন দেড় লক্ষ টাকা বিল মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। বিল মেটানো না হলে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছেন। তাতেই চন্দ্র হালাম ও তাঁর পরিবারের সাথে নার্সিং হোমের কর্মীদের বচসা বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, প্রসবের জন্য কৈলাসহর স্থিত উনকোটি নার্সিং হোমে এসে ভর্তি হয়েছিলেন চন্দ্রপতি হালাম। তার বাড়ি পানিসাগর চন্দ্ররাম পাড়ায়। প্রসব বেদনা নিয়ে প্রথমে ধর্মনগর হাসপাতালে গেলেও সেখান থেকে তাকে কৈলাসহর উনকোটি নার্সিং হোমে স্থানান্তর করা হয়।

আজ বিকাল ৩ টে নাগাদ ওই প্রসূতি মহিলা নার্সিং হোমে এসে ভর্তি হয়েছে বলে জানায় মৃতার পরিবারের লোকজন। কিন্তু ৪ টে নাগাদ চিকিৎসকরা এসে জানায় বাচ্চা ও মা দুজনেই মৃত।

পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, নার্সিং হোমে জরুরি বিভাগে ভর্তি করার সময় একটি কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাগজে কি লেখা ছিল তা রোগীর পরিবারের কাছে প্রকাশ করা হয় নি।

এদিকে কাগজের লেখা ছিল রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা এবং প্রসবের ক্ষেত্রে কি সমস্যা রয়েছে ইত্যাদি সম্পর্কে। পাশাপাশি এই অপারেশনে কত তারা বিল হচ্ছে সেটাও উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু রোগীর পরিবার লেখাপড়া জানেন না, ফলে তারা কিছুই বুঝতে পারে নি। রোগীর মৃত্যুর পর বিলের দেড় লক্ষ টাকা শোধ করতে বলা হয় পরিবারকে। না হলে মৃতদেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ। তাই এ নিয়ে নার্সিং হোমের কর্মীদের সাথে রোগীর পরিবারের বচসা হয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কৈলাসহর থানা পুলিশের কাছে খবর পাঠানো হয়। রোগীর পরিবার নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে কেস করেছে বলেও জানান মৃতার জনৈক আত্মীয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *