হাফলং (অসম), ৩ ডিসেম্বর (হি.স.) : ডিমা হাসাও জেলা সদর হাফলঙে ভিনধর্মী দুই যুবকের হাতে জনৈক উচ্চশিক্ষিত উপজাতি মহিলার সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী মহিলা আব্দুস সিদ্দিক এবং আহাদ উদ্দিন নামের দুই যুবকের বিরুদ্ধে হাফলং সদর থানায় এফআইআর করেছেন। এফআইআর-এর ভিত্তিতে পুলিশ এক মামলা রুজু করে তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে। অপকর্মে লিপ্ত পলাতক দুই যুবককে ধরতে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
আজ ঘটনার বিবরণ দিয়ে ভুক্তভোগী মহিলা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পুরনো কাপড়ের ব্যবসা করে নিজের পরিবার চালান তিনি। এই ব্যবসায় নিয়োজিত হয়ে মাকে সাহায্য করার পাশাপাশি তিনি ‘আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশন’ (এপিএসসি)-এর পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পুরনো কাপড় আব্দুস সিদ্দিক এবং আহাদ উদ্দিনের কাছ থেকে কেনেন।
গত ১ নভেম্বর কাপড় কিনতে তিনি প্রথমে আব্দুস সিদ্দিকের দোকানে যান। আব্দুস সিদ্দিক তাঁকে কাপড় দেখানোর কথা বলে বিজেপি অফিসের সামনে তার গুদামে নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুস তাঁর শ্লীলতাহানি করে। তার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, আব্দুস সিদ্দিকের কাছ থেকে আর কাপড় কিনবেন না। লোকলজ্জার ভয়ে সেদিনের ঘটনা চেপে যান তিনি।
পরবর্তীতে ২৪ নভেম্বর তিনি (ভুক্তভোগিণী) আহাদ উদ্দিনের কাছে পুরনো কাপড় কিনতে যান। কিন্তু বিস্ময়করভাবে সেও তাঁর সঙ্গে অপকর্ম করার চেষ্টা চালায়।
ঘটনাগুলিকে আর চেপে রাখা চলে না স্থির করে গত ২৫ নভেম্বর তিনি দুই যুবকের বিরুদ্ধে হাফলং সদর থানায় এফআইআর দাখিল করেন। কিন্তু থানায় অভিযোগ দায়ের পর একটি মহল নানাভাবে তাঁকে চাপ দিচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা নাকি বিষয়টি নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া না করতে বলছে। এতে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা বাঁধতে পারে। তাই এফআইআর প্রত্যাহার করে তাদের (অভিযুক্ত) সঙ্গে আপস মীমাংসা করতে প্রেশার দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ ভুক্তভোগিণীর। তবে তিনি কোনও চাপের কাছে মাথা নত করবেন না বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার বিশ্বহিন্দু পরিষদ এবং জেলার মহিলা সংগঠনগুলি অভিযুক্ত দুই যুবক আব্দুস সিদ্দিক ও আহাদ উদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে।