কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : সন্দেশখালিতে ‘জনজাতি সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপর অত্যাচার’ চলছে! আদিবাসীদের কাছ থেকে জমি ‘কেড়ে’ নেওয়া হয়েছে! এমন অভিযোগ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই।
মঙ্গলবার ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। ছত্তীসগড়ের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে আশা প্রকাশ করেছেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মমতা দ্রুতই পদক্ষেপ করবেন। শাহজাহান শেখদের বিরুদ্ধেও সক্রিয় হবে সরকার।
চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গে মহিলা এবং জনজাতি সম্প্রদায়ের উপর ‘অত্যাচার’ নিয়ে সরব হয়েছেন বিষ্ণুদেও। তিনি মমতার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের মা-বোনদের সঙ্গে যে অন্যায়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। মনকে কষ্ট দেয়। আপনার রাজ্যে সন্দেশখালিতে ৫০-এরও বেশি জনজাতি সম্প্রদায়ের মহিলার উপর অত্যাচার, হাজার আদিবাসীর কাছ থেকে জমি কেড়ে নেওয়া, এমনকি, ১০০ দিনের কাজের টাকাও জোর করে ছিনিয়ে নেওয়ার মতো যে ঘটনা ঘটছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’
জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশন সন্দেশখালি পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশও করেছে তারা। বিষ্ণুদেওয়ের চিঠিতে তার উল্লেখও রয়েছে। তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় তফসিলি কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা অত্যন্ত ‘ভয়ানক’। এর পরেই ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকেই নারীর ক্ষমতায়নের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ইতিহাস তা মনে রেখেছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু, শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভূমি এই পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার সংস্কৃতি গোটা বিশ্ব জানে। আপনার রাজ্যে যে অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তা সভ্য সমাজ সহ্য করতে পারে না।’’
বিষ্ণুদেও চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, ‘‘শুধু তুষ্টিকরণ, ভোটের রাজনীতির কারণে এ ভাবে রাজ্যে আদিবাসীদের জীবন সঙ্কটের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ওঁদের সম্মান, জীবন নিয়ে যে খেলা হচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ এর পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে এই নিয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন। শাহজাহানদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থার আধিকারিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। সেই থেকে নিখোঁজ তৃণমূল নেতা।

