শিলিগুড়ি, ২৭ আগস্ট (হি.স) : “ ‘কন্যার’ (মেয়ে)জীবন ছাড়া কন্যাশ্রী হতে পারে না” । শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ায় খুন হওয়া স্কুলছাত্রীর বাড়িতে এসে এই ভাষাতেই রাজ্যে মেয়ের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে প্রশাসনকে খোঁচা দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
গত ২১ আগস্ট মাটিগাড়ার পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। রবিবার দুপুরে ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সঙ্গে ছিলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্টা। এদিন মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে গোটা ঘটনার কথা শোনেন রাজ্যপাল। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এরপর এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি । সেই সঙ্গে ‘কন্যাশ্রী’-এর প্রসঙ্গত তুলে রাজ্যে মেয়ের নিরাপত্তাহীনতা খোঁচা দেন প্রশাসনকে । এদিন তিনি বলেন, “এটা হওয়া উচিত ছিল না… এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক…। ‘কন্যাশ্রী’ অনুষ্ঠান নিয়ে গর্ব করেছিলাম। তবে ‘কন্যার’ (মেয়ে) জীবন ছাড়া কন্যাশ্রী হতে পারে না। সমাজ একটি কন্যার জীবন রক্ষা করতে না পারলে, এর জন্য বড় দাবি করার মানে কি?”
প্রসঙ্গত, গত ২১ আগস্ট মাটিগাড়ার পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির পরনে ছিল স্কুলের পোশাক। ওই কিশোরীকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পাহাড়-সমতলের বাসিন্দারা। ঘটনার দিনই গভীর রাতে শিলিগুড়ি পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এদিকে, অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বজরং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে ২৪ আগস্ট ১২ ঘণ্টা শিলিগুড়ি বনধের ডাক দেয় হিন্দু সংগঠন। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় গোটা পাহাড়। ছাত্রীকে খুনের প্রতিবাদ জানিয়ে ও দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ২৬ আগস্ট পাহাড়ে ১২ ঘণ্টা বনধ ডাকা হয়। তিনটি পার্বত্য মহকুমা দার্জিলিং, কার্শিয়াং এবং কালিম্পংয়ে বনধের প্রভাব ছিল যথেষ্টই। বন্ধ ছিল সমস্ত দোকানপাট। তবে শান্তিপূর্ণভাবে বনধ পালিত হয়েছে। এই আবহেই রবিবার মাটিগাড়ায় খুন হওয়া স্কুলছাত্রীর বাড়িতে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।