দিগরখাল (অসম), ২২ আগস্ট (হি.স.) : কাছাড় জেলার দিগরখালে ত্রিস্তরীয় কমপ্যাক্ট চেকগেটের সামনে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অভিযান চালিয়ে বিএসএফ আরও ১১টি গরু বোঝাই সাদা রঙের বলেরো পিকআপ-ভ্যান আটক করতে সক্ষম হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার রাতে বিএসএফ-এর কাছাড়-মিজোরাম ফ্রন্টিয়ারের ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের অপারেশন টিমের জওয়ানরা ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দিগরখালে অভিযানে নেমেছিলেন।
জওয়ানরা সন্দেহজনক অবস্থায় এএস ১১ ডিসি ৬৩৫৭ নম্বরের বলেরো পিকআপ-ভ্যান গাড়িতে তালাশি চালিয়ে গরুগুলো দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় গুমড়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন বিএসএফ জওয়ানরা। ট্রাকের উপরে ত্রিপাল মোড়ে পূর্ণ বয়স্ক ১১টি গরু বোঝাই ছিল। গরু সহ বলেরো পিকআপ-ভ্যানটি গুমড়া পুলিশে সমঝে দিয়ে ভ্যানের রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করে পুলিশ ফাঁড়িতে এফআইআর দায়ের করেছে বিএসএফ।
পুলিশ সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা নথিভুক্ত করে পাচারচক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। উদ্ধারকৃত প্রতিটি গরুর ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা করে ১১টি গরুর বাজারমূল্য কম করেও ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হবে বলে ধারণা করছে বিএসএফ।
উল্লেখ্য, বরাক উপত্যকার পাঁচগ্রাম-কাটিগড়া-কালাইন-ভাটপাড়া-গুমড়া-দিগরখাল হয়ে মেঘালয় রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমানার ডনা পার করে বাংলাদেশে গরু-মহিষ পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি বড়সড় সিন্ডিক্যাটচক্র। গরু-মহিষ পাচারের অভিযোগে বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন দাগি আসামির বিরুদ্ধে গুমড়া ও কাটিগড়া থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএসএফ-এর গোয়েন্দা সূত্রে গরু-মহিষ পাচারে লিপ্ত দাগি অপরাধীদের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে এরা সাব্বির, বাহার উদ্দিন, জুয়েল, দিদারুল, সিপন, কালা মিঞা, বাবলু, ইমদাদ, সজিম সহ আরও কয়েকজন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে বিভিন্ন মামলার সূত্র ধরে পুলিশ গ্রেফতার করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে বার-কয়েক। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জামিনে মুক্ত পেয়ে ফের পাচার অভিযানের নেতৃত্ব প্রদানে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এভাবে আইনের মারপ্যাঁচের মধ্যে দেদার গতিতে গরু-মহিষ পাচারের বেআইনি কাজ অব্যাহত রেখেছে দুষ্কৃতীরা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ১৫ আগস্ট রাতে একইভাবে বলেরো পিকআপ ক্যারিয়ারে ১৬টি গরু বোঝাই করে পাচারের পথে দিগরখালে পুলিশের রুটিন তাল্লাশির সময় ধরা পড়ে। ২১ মার্চ দিগরখালে একটি ট্রাকে তলাশি চালিয়ে ১৯টি মহিষ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন বিএসএফ জওয়ানরা। গত ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে তিনটায় একইভাবে ১৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মূল্যের কুড়িটি মহিষ বোঝাই ট্রাক আটক করেছিল বিএসএফ। ২৫ মে একটি ট্রাকে ১৯টি মহিষ পাচারের পথে দিগরখালে আটক করেছিল বিএসএফ। দীর্ঘদিন থেকে সিন্ডিক্যাট চক্রের মাফিয়াদের তৎপরতায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাঁচগ্রাম-কাটিগড়া-কালাইন-দিগরখাল-গুমড়া-মালিডহরের রাস্তাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে মেঘালয়ের ডনা হয়ে বাংলাদেশে অবাধে মহিষ পাচার সংক্রান্ত ঘটনা সর্বজনবিদিত স্পর্শকাতর বিষয়। গরু-মহিষ পাচারচক্রের বিরুদ্ধে বিএসএফ জওয়ানরা ইদানীংকালে লাগাতার অভিযান চালিয়ে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছে বিএসএফ-পুলিশ।

