ইম্ফল, ২২ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : কংগ্রেস উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আবেগ এবং সমস্যা কখনই বুঝেনি। মণিপুরে নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এভাবেই কংগ্রেসকে বিধেছেন। সাথে তাঁর দাবি, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দেশের প্রগতির ইঞ্জিন বলে মনে করে কাজ চালিয়েছে।
মঙ্গলবার মণিপুরের ইম্ফলে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে উপেক্ষা করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস নেতারা মণিপুরে এসে বড় বড় দাবি করেন, কিন্তু অন্য রাজ্যে তাঁরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পোশাক এবং সংস্কৃতি নিয়ে মজা করেন।
তাঁর দাবি, কংগ্রেস মণিপুরকে পাহাড় ও উপত্যকার মধ্যে ভাগ করে রাজনীতি করেছে। তাঁরা কখনোই এ অঞ্চলে যোগাযোগের উন্নয়নে কাজ করেননি। সত্যিটা হল কংগ্রেস কখনই উত্তর-পূর্বের মানুষের অনুভূতি ও সমস্যা বুঝতে পারেনি, তীব্র কটাক্ষ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তাঁর কথায়, এনডিএ সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অষ্ট লক্ষ্মী এবং ভারতের উন্নয়নের ইঞ্জিন হিসাবে বিবেচনায় কাজ করছে। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বের মানুষের সেবা এবং সবার উন্নয়নই ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অগ্রাধিকার। আমাদের জন্য মণিপুর সহ সমগ্র অঞ্চল হল পূর্ব এশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্য ও ব্যবসার প্রবেশদ্বার। সেই কারণেই মণিপুরকে দেশের রেল মানচিত্রে নিয়ে এসেছে বিজেপি সরকার। জিরিবাম রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৫-৬ বছর পূর্ণ করেছে। রেল যোগাযোগ এই অঞ্চলে পর্যটনের উন্নতি ঘটাবে। তাতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে, দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদি বলেন, গত কয়েক বছরে জাতীয় সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও নজিরবিহীন কাজ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে শুধুমাত্র একটি জাতীয় সড়ক প্রকল্পের কাজ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে রানি গাইদিনলিউ স্টেশনে যখন প্রথম পণ্যবাহী ট্রেন এসেছিল, তখন আমিও আপনাদের সবাইকে নিয়ে খুব আনন্দিত হয়েছি। সাথে তিনি যোগ করেন, সেই দিন বেশি দূরে নয় যখন রেল ইম্ফল পৌঁছাবে এবং মণিপুরের মানুষ সারা দেশের সঙ্গে রেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবে।
তিনি বলেন, বিজেপি সরকার মণিপুরে রানি গাইদিনলিউ-এর নামে একটি জাদুঘরও তৈরি করছে। তা মণিপুরের প্রতিটি জনজাতিও গর্বিত করবে। তাঁর দাবি, স্বাধীনতা সংগ্রামে জনজাতি সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিজেপি সরকারও এই অবদানকে সম্মান জানিয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর আদিবাসী গর্ব দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় মণিপুরে ৬০ হাজারেরও বেশি বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। তার বেশির ভাগই নারীদের হাতে রয়েছে। হর ঘর জল মিশন চালু হওয়ার আগে, মণিপুরে মাত্র ২৫,০০০ বাড়িতে পাইপলাইনে জলের সংযোগ ছিল। আজ মণিপুরে প্রায় ৩ লক্ষ পরিবারে পাইপলাইনে জলের সংযোগ রয়েছে৷
তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, বিজেপি এখানে বাঁশ চাষি এবং বাঁশ শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রচার করছে। এর পাশাপাশি আমাদের সরকার বাঁশ সংক্রান্ত আইনেও পরিবর্তন এনেছে। আমাদের সরকার যে মিশন অয়েল পাম শুরু করেছে তাতে মণিপুরের কৃষকরাও উপকৃত হবেন, বলেন তিনি।