বিহারে মালগাড়ির দুর্ঘটনায় ১৯টি ওয়াগন লাইনচ্যুত, নদীতে পড়ে ১০টি বগি

জামুই, ২৮ ডিসেম্বর : বিহারের জামুই জেলায় একটি মালগাড়ির অন্তত ১৯টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি ওয়াগন সেতু থেকে নীচে নদীতে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনার ফলে রেল চলাচল সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়েছে। তবে, স্বস্তির বিষয় যে, দুর্ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

রেল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে জামুই জেলার সিমুলতলা সংলগ্ন তেলওয়া হল্টের কাছে বারুয়া নদীর উপর অবস্থিত সেতুতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জসিডিহ-ঝাঝা রেলপথে চলাচলকারী সিমেন্ট বোঝাই একটি মালগাড়ি আচমকাই লাইনচ্যুত হয়। রাত আনুমানিক ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ, সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় একের পর এক বিকট শব্দে ওয়াগনগুলি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলটি আসানসোল রেল ডিভিশনের অধীনে অবস্থিত জসিডিহ–ঝাঝা মূল রেললাইনের ব্রিজ নম্বর ৬৭৬ এবং খুঁটি নম্বর ৩৪৪/১৮-এর কাছাকাছি।

এই দুর্ঘটনার পর আপ ও ডাউন—দু’দিকের রেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। কিউল–জসিডিহ শাখায় চলাচলকারী একাধিক যাত্রী ও মালগাড়ি বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রেল পুলিশ, আরপিএফ ও রেলের প্রযুক্তি বিভাগের আধিকারিকরা। দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু হয় এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুর্ঘটনার ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানা গেছে, সিমেন্ট বোঝাই মালগাড়িটি জসিডি থেকে ঝাঝার দিকে যাচ্ছিল এবং তেলওয়া বাজার হাল্টের কাছে বাধুয়া নদীর উপর অবস্থিত 676 নম্বর সেতুতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় মোট ১৬ থেকে ১৯টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে তিনটি ওয়াগন সেতু থেকে বাধুয়া নদীতে পড়ে যায়। কয়েকটি কামরা সেতুর উপর পাল্টি খেয়ে একে অপরের উপরে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর ট্র্যাকের আশেপাশে সিমেন্টের বস্তা ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

রেলের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত এই রুটে রেল চলাচল ব্যাহত রয়েছে। তবে রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মালগাড়ির ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে এবং উদ্ধারকাজ চলছে। “যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চলছে দুর্ঘটনাস্থলে,” জানান রেল মুখপাত্র সরস্বতী চন্দ্র।

তিনি আরও বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছেন রেল আধিকারিকরা। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, কোনও যান্ত্রিক বা ট্র্যাকের ত্রুটির কারণে মালগাড়িটি লাইনচ্যুত হয়েছে। ট্র্যাক মেরামতির পরই রেল চলাচল পুনরায় শুরু হবে।”

রেল কর্তৃপক্ষের তরফে যাত্রীদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া, দুর্ঘটনার পর হাওড়া-দিল্লি রুটের বেশ কয়েকটি ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। এআরটি (এক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেন) ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে এবং লাইন পরিষ্কার করার তৎপরতা চলছে।

এছাড়া, দুর্ঘটনার ফলে কিউল-জসিডি সেকশনে বেশ কয়েকটি যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

Leave a Reply