আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর: কেন্দ্রীয় সরকারের প্রণীত শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থবিরোধী ও সর্বনাশকারী শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে সিআইটিইউ–র রাজ্য কমিটির উদ্যোগে আজ অফিস লেনস্থিত শ্রম দপ্তরের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি সংগঠিত হয়েছে।
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত, প্রাক্তন বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে সহ সিআইটিইউ–র রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ও কর্মচারীর অংশগ্রহণে কর্মসূচিটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এদিন প্রাক্তন সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে চারটি শ্রম কোড কার্যকর করেছে তা শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করার পাশাপাশি স্থায়ী চাকরি, ন্যূনতম মজুরি, সামাজিক সুরক্ষা এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারকে গুরুতরভাবে আঘাত করছে। এই শ্রম কোডের মাধ্যমে শ্রমিকদের উপর শোষণ আরও বাড়বে এবং মালিকপক্ষকে একতরফা সুবিধা দেওয়া হবে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। এদিন তিনি আরও বলেন, নতুন শ্রম আইন সম্পূর্ণভাবে শ্রমিকস্বার্থবিরোধী এবং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার খর্ব করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্র এই আইন প্রণয়ন করেছে। এদিন তিনি আরও বলেন, গত ২১ নভেম্বর নয়া শ্রমকোড কার্যকর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্ত সরকার পুরোপুরি কর্পোরেটদের স্বার্থের জন্য লাগু করেছে। এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ। কারণ, দেশের বেকার প্রবীণ ও কৃষকদের স্বার্থ বিরোধী এই আইন।
তাঁর কথায়, গোটা দেশের কৃষকদের আন্দোলনের জেরে ২৯ টি শ্রম আইন বাতিল করে শ্রম বিরোধী ৪টি শ্রম কোড লাগু করেছে কেন্দ্র সরকার। এই শ্রম কোড লাগুর ফলে ৮ঘণ্টার কাজকে ১২ ঘণ্টা বাধ্যতামূলক করার অধিকার কর্পোরেটের হাতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পি এফ গ্রাটুইটি সহ অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা অনিশ্চিত করা হয়েছে।
সিআইটিইউ নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, অবিলম্বে শ্রম কোড বাতিল করে শ্রমিক স্বার্থরক্ষায় আগের শ্রম আইনসমূহ পুনর্বহাল করতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কাজের নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তাঁরা।
সিআইটিইউ–র রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে আগামী দিনগুলিতেও ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।

