অভিযোগ দায়েরের আগেই গ্রেফতার, বাস কন্ডাক্টর দীপঙ্কর ভক্তকে আটক ঘিরে তীব্র বিতর্ক, তেলিয়ামুড়া থানার সামনে বিক্ষোভ

আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর : মহিলা যাত্রীর শরীর স্পর্শের অভিযোগে বাস কন্ডাক্টর দীপঙ্কর ভক্তকে গ্রেফতার করা নিয়ে তেলিয়ামুড়া থানা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিযোগ দায়েরের আগেই তাঁকে পুলিশ আটক করেছে এই দাবি ঘিরেই শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। শনিবার সকালে তেলিয়ামুড়া থানার সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবহণ শ্রমিকরা।

অভিযোগ, আগরতলা থেকে তেলিয়ামুড়াগামী একটি চলন্ত বাসে শুক্রবার সকালে এক মহিলা যাত্রীর শরীরে অশালীনভাবে হাত দেন কন্ডাক্টর দীপঙ্কর ভক্ত। ওই মহিলা শুক্রবার রাতে তেলিয়ামুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী, নাটকীয় মোড় নেয় ঘটনাটি তার আগেই। তাঁদের বক্তব্য, অভিযোগ দায়েরের আগেই শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ হাওয়াই বাড়ি নাকা পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে পুলিশ দীপঙ্কর ভক্তকে থানায় তুলে নিয়ে আসে। প্রশ্ন উঠেছে লিখিত অভিযোগের আগেই কীভাবে পুলিশ তাঁকে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করল?

শ্রমিকদের আরও অভিযোগ, তেলিয়ামুড়া বাস চালক সংঘের এক শীর্ষ নেতা তপন দাস এই ঘটনায় বিতর্কিত ভূমিকা নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, তিনি অভিযোগকারী মহিলার বক্তব্যের ভিত্তিতে বাসস্ট্যান্ডে দীপঙ্কর ভক্তকে মারধর করেন এবং পরে বিষয়টি ‘মিটিয়ে নেওয়ার’ চেষ্টা চালান। পাশাপাশি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দীপঙ্করকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর ক্ষেত্রেও অপ্রত্যক্ষ মদত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে তেলিয়ামুড়া থানার চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, একজন শ্রমজীবী মানুষকে যদি মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়, তা আমরা মেনে নেব না। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী বিচার হোক, কিন্তু অন্যায় হলে তার বিরোধিতা করব।

অন্যদিকে, এ বিষয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া দীপঙ্কর ভক্তকে শনিবার খোয়াই জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহণ শ্রমিক মহলে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে। একই সঙ্গে উঠছে গুরুতর প্রশ্ন—আইনের শাসন কতটা নিরপেক্ষ? তেলিয়ামুড়া থানা কি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ভরসাস্থল, নাকি প্রভাবশালীদের চাপের কাছে নতজানু একটি প্রতিষ্ঠান?

ঘটনার তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিতে পরিস্থিতি এখনও থমথমে।

Leave a Reply