নয়াদিল্লি, ১৪ ডিসেম্বর : সুদানে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, সুদানের দক্ষিণ কোরডোফান রাজ্যের কাদুগলিতে, যেখানে রাষ্ট্রসংঘের অস্থায়ী নিরাপত্তা বাহিনী একটি লজিস্টিক ক্যাম্পে ড্রোন হামলা চালানো হয়।
এদিকে, রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটিকে ‘‘অযৌক্তিক’’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।’’ সুদানের সরকার ও সেনাবাহিনী হামলার জন্য প্যারামিলিটারি গোষ্ঠী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’কে দায়ী করেছে, তবে আরএসএফ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস এক বিবৃতিতে নিহত সেনাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন, ‘‘শান্তি প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের ৬ জন বীর শান্তিরক্ষী শহিদ হয়েছেন এবং আরও ৮ জন আহত হয়েছেন।’’ তিনি রাষ্ট্রসংঘের কাছে আহত সেনাদের জন্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তা প্রাপ্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘‘এলাকার পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল, এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও উদ্ধার অভিযানে কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’’
এদিকে, সুদানে ২০২২ সাল থেকে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ফলে শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং দেশটির সেনারা এবি-ই এলাকায় শান্তিরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিল।
এছাড়া, ইউনিসিএফএ’র ৪,০০০ শান্তিরক্ষী ও পুলিশ সদস্যরা দক্ষিণ কোরডোফান অঞ্চলে অসামরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে ছিলেন।
এই হামলার পর বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকও এক বিবৃতিতে জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করেছে।
সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।

