ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন দিগন্ত: পুতিনের ভারত সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর

নয়াদিল্লি, ৩ ডিসেম্বর : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক বছরে ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ৪ ও ৫ ডিসেম্বর, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য পুতিনের আসন্ন সফরের আগের দিন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলন করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, রাশিয়ার বিশেষ দক্ষতার কাজের জন্য দক্ষ এবং অর্ধ-দক্ষ পেশাদারদের প্রয়োজন রয়েছে। দুই দেশ মিলে এই বিষয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে, যা “মোদি সরকারের রাশিয়া সফরের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তারা আরও জানান, ভারত ও ইউরেশিয়ান দেশগুলির মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি শুরু হয়েছে এবং এর মাধ্যমে ভারতীয় রপ্তানি বাড়ানো যাবে, বিশেষ করে ফার্মা, মেরিন এবং ভোক্তা পণ্যে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুপি-রুবল সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া চলছে এবং রাশিয়ায় ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, বিশেষত মেরিন পণ্য। গত মাসে আলু এবং ডালিমের রপ্তানি অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়া-ভারত বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন দুই দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম, যার লক্ষ্য ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো। বিশেষ করে, রাশিয়া থেকে ভারত প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন টন সার আমদানি করে থাকে।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও গভীরতা আনতে ভারত-রাশিয়া সহযোগিতাকে বাণিজ্য ছাড়াও নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়া উচিত, বলেও জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানান, রাশিয়ার কাজান এবং ইয়েকাতেরিনবুর্গে ভারতীয় কনস্যুলেট চালু করা হচ্ছে, যা রাশিয়ায় ভারতের কূটনৈতিক উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি করবে।

অন্যদিকে, রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে বর্তমানে ৫০ জন ভারতীয় নাগরিক কাজ করছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, “ভারতীয়রা রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে কাজ করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় পদ্ধতি নেই। ১১ থেকে ১২ জন নিখোঁজ, বহু সেনা সদস্য ছাটাই হয়েছেন এবং আরও কিছু সদস্য ছাটাই হওয়ার পথে।” তাদের মতে, যারা এখনো রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন, তাদের শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

Leave a Reply