আগরতলা, ২২ নভেম্বর: খুমুলুঙ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় চলমান সংঘর্ষ ও অশান্তির প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। তাঁদের অভিযোগ, গতকাল মুখ্যমন্ত্রী খুমুলুংয়ে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিআইএমকে লক্ষ্য করে ‘অপ্রাসঙ্গিক, ভিত্তিহীন ও আজগুবি’ মন্তব্য করেছেন।
আজ বিবৃতি প্রকাশ করে সিপিআইএমের দাবি করে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য তাঁর কমিউনিস্ট বিদ্বেষ প্রকাশ করে। তাঁরা বলেন, কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় সিপিআইএমের ‘কালচার’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে কটূক্তি করেছেন তা শাসক দল বিজেপি ও তাদের শরিক তিপরা মথার অপকর্ম আড়াল করতেই করা হয়েছে।
রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী অভিযোগ করে জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিজেপি ও তিপরা মথার কর্মী-সমর্থকদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে সরকার ব্যর্থ, আর সেই ব্যর্থতা আড়াল করতেই সিপিআইএমকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। তারা অভিযোগ করে, জনবিরোধী রাজ্য সরকার ও এডিসি প্রশাসনের অপদার্থতা এভাবে ঢেকে রাখা যাবে না, জনগণও বিভ্রান্ত হবে না।
সিপিআইএমের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে এই বিস্তীর্ণ এলাকায় দু’শরিক দলের মধ্যে দুর্নীতির অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে বারবার সংঘর্ষ হচ্ছে। পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটতরাজ ও মারধর চলছে লাগামহীনভাবে। তারা অভিযোগ করে, ওই এলাকার দু’টি থানা এবং পুলিশ কার্যত নিষ্ক্রিয়।
এই পরিস্থিতিতে জনমনে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি শাসকদলের এক মন্ত্রী প্রকাশ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন বলেও উল্লেখ করে সিপিআইএম।
সিপিআইএমের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী সন্ত্রাস নিয়ে কঠোর মন্তব্য না করে উল্টো সিপিআইএমকে আক্রমণ করায় দুষ্কৃতীরা আরও উৎসাহিত হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ক্ষুণ্ণ হবে।
রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বদ উদ্দেশ্যমূলক ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীকে সরব হতে হবে। পাশাপাশি তারা দাবি করেছে, সরকারকে সংঘর্ষ বন্ধ করে স্বাভাবিক শান্তি ও সুস্থিতি ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

