নয়া দিল্লি, ২২ নভেম্বর: ভারতের বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও দৃঢ়ভাবে চলমান রয়েছে, তবে চলতি হিসাব এই আর্থিক বছরে সামান্য ঘাটতির মধ্যে যেতে পারে, এমন ধারণা দিয়েছে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) রিসার্চ তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে। তবে, প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাবের ঘাটতি পরবর্তী সময়ে পুনরায় ইতিবাচক অঞ্চলে ফিরে আসবে।
এসবিআই রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এফওয়াই 26-এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকে চলতি হিসাবের ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদনের ১.৮ শতাংশ থেকে ২.৮ শতাংশ হতে পারে, তবে এফওয়াই 26-এর চতুর্থ ত্রৈমাসিকে এটি ইতিবাচক হতে পারে। পুরো বছরের জন্য চলতি হিসাবের ঘাটতি ১–১.৩ শতাংশ জিডিপি এর মধ্যে থাকতে পারে, এবং সামগ্রিকভাবে ব্যালান্স অফ পেমেন্টস এই আর্থিক বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সামান্য ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে।
এসবিআই রিসার্চ প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করেছে, “যদিও এফওয়াই 26-এ ব্যালান্স অফ পেমেন্টস নেতিবাচক হতে পারে, তবে এর প্রভাব নিয়ে যে সতর্কতা বার্তা শোনা যাচ্ছে, তা এই মুহূর্তে কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হচ্ছে।”
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর, এফওয়াই 26-এর মধ্যে ভারতের মোট পণ্য রপ্তানি ২.৯ শতাংশ বেড়ে ২২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আমেরিকাতে রপ্তানি ১৩ শতাংশ বেড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যদিও ইউএস-এ রপ্তানি শেয়ারের পতন এবং আগের মাসগুলোতে রপ্তানির শুরুর প্রভাবের কারণে কিছুটা খারাপ ফল হয়েছে।
এসবিআই রিসার্চ জানিয়েছে, মেরিন পণ্য এবং তৈরি পোশাক — বিশেষ করে তুলা — এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। এছাড়াও, ভারতের রপ্তানির গন্তব্য দেশে একটি উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য এসেছে, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, ভিয়েতনাম, জাপান, হংকং, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং নাইজেরিয়া বিভিন্ন পণ্য শ্রেণিতে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে উঠে এসেছে।
এসবিআই রিসার্চ প্রতিবেদনে সরকারী উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেছে, যেখানে সম্প্রতি ৪৫,০৬০ কোটি মঞ্জুর করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০,০০০ কোটি ব্যাংক ঋণের ওপর ক্রেডিট গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পদক্ষেপটি ভারতের রপ্তানিকারকদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর এবং নতুন ও উদীয়মান বাজারে প্রবেশ সহজ করার লক্ষ্য নিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এসবিআই রিসার্চ আরো উল্লেখ করেছে, যে রুপি ৮৯.৪৯-এর নিচে পতিত হয়েছে, তা মূলত বৈশ্বিক আর্থিক বাজারের অস্থিরতা এবং ডলার ইনডেক্সের শক্তিশালীকরণের ফলস্বরূপ হয়েছে, এবং এটি রুপি মুদ্রার কাঠামোগত দুর্বলতা নয়।

