তেজস্বী যাদবের বড় নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি: জীবিকা দিদিদের জন্য ৩০,০০০ টাকা বেতন, স্থায়ী চাকরি ও ঋণ মকুবের ঘোষণা

পাটনা, ২২ অক্টোবর: বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরজেডি নেতা ও প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এনডিএ সরকারের ‘জীবিকা দিদি’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন। বুধবার পাটনায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানালেন, আরজেডি ক্ষমতায় এলে জীবিকা প্রকল্পে যুক্ত সকল মহিলা কর্মীকে স্থায়ী সরকারি চাকরি, ৩০,০০০ টাকা মাসিক বেতন, ঋণ মকুব এবং ৫ লক্ষ টাকার বিমা সুবিধা দেওয়া হবে।

তেজস্বী বলেন, “আপনারা সবাই জানেন, বর্তমান সরকার জীবিকা দিদিদের সঙ্গে অন্যায় করেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জীবিকা কমিউনিটি মোবিলাইজার দিদিদের স্থায়ী করা হবে এবং তাদের সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হবে। মাসিক বেতন বাড়িয়ে ৩০,০০০ টাকা করা হবে। এটা সাধারণ ঘোষণা নয়—এটা জীবিকা দিদিদের দীর্ঘদিনের দাবি।”

আরজেডি নেতা আরও প্রতিশ্রুতি দেন, জীবিকা দিদিদের পুরনো ঋণের সুদ মকুব করা হবে এবং আগামী দুই বছর তারা সুদমুক্ত ঋণ পাবেন।
তিনি বলেন, “প্রতিটি জীবিকা দিদিকে মাসে অতিরিক্ত ২,০০০ টাকা ভাতা এবং ৫ লক্ষ টাকার বিমা কভারেজ দেওয়া হবে।”

এই ঘোষণা সরাসরি এনডিএ সরকারের ‘জীবিকা’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এটি আরজেডির নির্বাচনি প্রচারে অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।

একই সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের স্থায়ী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তেজস্বী যাদব।

তিনি বলেন, “রাজ্যের প্রতিটি দপ্তরে নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের স্থায়ী করে সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়া হবে। এই কর্মীদের শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক শোষণ করা হচ্ছে, যা আমরা বন্ধ করব।”

তিনি অভিযোগ করেন, “চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বিনা কারণে ছাঁটাই করা হয়, তাদের বেতনের ওপর ১৮% জিএসটি কাটা হয়, মহিলা কর্মীরা দুই দিনের ছুটি পর্যন্ত পান না।”

তেজস্বী তার পুরনো নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি আবারও তুলে ধরেন—আরজেডি ক্ষমতায় এলে বিহারের প্রতিটি পরিবারে একজন করে সরকারি চাকরি পাবেন।

“আমাদের সরকার গঠনের ২০ দিনের মধ্যে একটি নতুন আইন করব এবং ২০ মাসের মধ্যে রাজ্যের কোনো পরিবার বেকার থাকবে না—প্রত্যেক বাড়িতে একজন সরকারি চাকরি পাবেন,” তিনি বলেন।

‘জীবিকা’ প্রকল্পটি হল বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বিহার রুরাল লাইভলিহুডস প্রজেক্ট । এর মূল উদ্দেশ্য হল গ্রামীণ দরিদ্রদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন। এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মহিলাদের ‘জীবিকা দিদি’ বলা হয়।

আরজেডির এই প্রতিশ্রুতিগুলি বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে সমর্থন টানতে।