আখিলেশ যাদবের দীপাবলি মন্তব্যে রাজনৈতিক বিতর্ক, বিজেপি ও হিন্দু সংগঠনের কড়া প্রতিক্রিয়া

লখনউ, ১৯ অক্টোবর : সমাজবাদী পার্টির প্রধান ও লোকসভা সাংসদ আখিলেশ যাদব দীপাবলি উদযাপন নিয়ে সরকারের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং বিশ্বজুড়ে বড়দিনের (ক্রিসমাস) উদযাপনের সঙ্গে তুলনা টেনে রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। শনিবার একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভগবান রামের নামে একটি পরামর্শ দেব। সারা বিশ্বে বড়দিনে শহরগুলো মাসের পর মাস আলোয় ভরে ওঠে। আমাদেরও তা থেকে শেখা উচিত। কেন আমাদের দীপ ও মোমবাতিতে এত টাকা খরচ করতে হবে?”

তিনি আরও বলেন, “এই সরকার থেকে আমরা আর কী আশা করতে পারি? এদের সরিয়ে দিতে হবে। আমরা আরও সুন্দর আলো দিতে পারি।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, তাঁর এই মন্তব্য তখন এলো যখন অযোধ্যা দীপাবলিতে নতুন ইতিহাস গড়ার পথে এগোচ্ছে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাম কী পৈড়ি ও ৫৬টি ঘাটে মোট ২৬,১১,১০১টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা অযোধ্যার আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক মহিমাকে তুলে ধরবে। প্রদীপ গোনার কাজও চলছে নির্দিষ্ট নকশার ভিত্তিতে।

আখিলেশের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। দলের জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, “অযোধ্যা যখন দীপ্তিমান, তখন আখিলেশ যাদবের সমস্যা হচ্ছে। সমাজবাদী পার্টির শাসনকালে অযোধ্যাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। সেই সময় রামভক্তদের উপর গুলি চালানো হয়েছিল। এখন অযোধ্যা যখন আলোকিত, তখন আখিলেশ যাদবের গায়ে জ্বালা।”

তিনি আরও বলেন, “এরা সইফাইতে গানের ও নাচের অনুষ্ঠান করত, কিন্তু দীপাবলি যদি অযোধ্যায় হয়, তাহলে আখিলেশ যাদবের আপত্তি হয়।”

এদিকে, হিন্দু সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জাতীয় মুখপাত্র বিনোদ বানসাল আখিলেশ যাদবকে ‘বিদেশি সংস্কৃতির প্রশংসা করে দেশীয় সংস্কৃতিকে অপমান’ করার অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, “দীপাবলির দিনে এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্রিসমাসের প্রশংসা করছেন। প্রদীপের আলো যেন তাঁর অন্তরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। তিনি ১০০ কোটিরও বেশি হিন্দুকে উপদেশ দিচ্ছেন—’প্রদীপ ও মোমবাতিতে টাকা খরচ করো না, বড়দিন থেকে শেখো’। এই তথাকথিত ‘জিহাদি ও ধর্মান্তরণ গ্যাং’-এর রক্ষক, যিনি নিজেকে যাদব বলেন, তিনি হিন্দুদের চেয়ে খ্রিস্টানদের বেশি ভালোবাসেন। বিদেশি উৎসবকে ভারতীয় উৎসবের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।”

বানসাল আরও বলেন, “যখন খ্রিস্টধর্মের অস্তিত্বও ছিল না, তখনও দীপাবলি উদযাপিত হত। আজ দীপাবলির দিনে তিনি বড়দিনের বক্তৃতা দিচ্ছেন। বড়দিন আসতে এখনো দুই মাস বাকি। তিনি জানেনই না কোন উৎসব চলছে। আখিলেশ যাদব কবে তাঁর ‘অ্যান্টি-সনাতন’ মানসিকতা থেকে মুক্ত হবেন? অযোধ্যার আলোর প্রতি এমন ঈর্ষা ও হিন্দুদের আনন্দে ব্যাঘাত কাম্য নয়।”

আখিলেশ যাদবের মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক, যা আগামী দিনেও উত্তাপ বাড়াতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।