সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সঙ্কটে সিনিয়র শিক্ষকদের চাকরি, রায় পুনর্বিবেচনার দাবিতে মিছিল বাম শিক্ষকদের

আগরতলা, ১৮ অক্টোবর : দেশের শীর্ষ আদালতের এক সাম্প্রতিক রায়ে ত্রিপুরার বহু সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি আজ সঙ্কটের মুখে। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যেন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে, এই দাবিতে আজ আগরতলা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করলেন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক বাম শিক্ষক নেতা বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে যেসব সিনিয়র শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ এখনো পাঁচ বছরের বেশি রয়েছে, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে আগামী দুই বছরের মধ্যে শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা (টেট) পাস করতে হবে, নতুবা বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হবে। একইসঙ্গে যেসব শিক্ষক চাকরির পাঁচ বছরের কম সময়ে রয়েছেন তাঁদের পদোন্নতির জন্যও টেট পাশ করা আবশ্যিক করা হয়েছে। এই রায় কার্যকর হলে ২৩ আগস্ট, ২০১০-এর আগে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষক সরাসরি চাকরি হারানোর মুখে পড়বেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে এর ফলস্বরূপ বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজও চরম উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘু এবং অ-সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে টেট বাধ্যতামূলক কিনা, তা নিয়ে মুম্বই ও মাদ্রাজ হাইকোর্টে ভিন্ন রায় আসায় সুপ্রিম কোর্টে একাধিক দেওয়ানি আপিল হয়। একসাথে সমস্ত মামলার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট এই ঐতিহাসিক রায় দেয়।

সমিতির দাবি, ত্রিপুরার শিক্ষকদের চাকরি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে এবং ১ সেপ্টেম্বরের রায়কে তুলে ধরে চাকরি বাতিলের আবেদন জানায়। এর ফলে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার শুনানি স্থগিত রাখে। এই অবস্থান কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে সমিতি মত প্রকাশ করেছে। সমগ্র পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে, টিজিটিএ (এইচ বি রোড) আগামী ১৮ অক্টোবর বিকাল ৪টা থেকে ‘শিক্ষাভবন অভিযান’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মূল দাবি, রাজ্য সরকার যেন অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে এবং কেন্দ্রীয় সরকার যেন একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করে।তাই সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যেন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে, এই দাবিতে আজ আগরতলা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করলেন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা।