নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর: দীপাবলির আনন্দে মেতে উঠতে প্রস্তুত রাজধানী দিল্লি। এই বছর সবুজ আতশবাজির অনুমতি দেওয়ায় উৎসবের আমেজে বাড়তি রঙ লেগেছে ঠিকই, কিন্তু সেই আনন্দে বড় ধাক্কা দিতে পারে শহরের দিন দিন খারাপ হতে থাকা বায়ু গুণমান।
আজ সকালে দিল্লি ও এনসিআর (জাতীয় রাজধানী অঞ্চল) জুড়ে বায়ুর মান ‘খুব খারাপ’ বিভাগে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড। আজ সকালে রাজধানীর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩৬৭-এ পৌঁছেছে, যা স্পষ্টতই খুব খারাপ স্তরে পড়ে।
দীপাবলির ঠিক আগে রাজধানী দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চলে বায়ুর গুণমান আশঙ্কাজনকভাবে অবনতি ঘটেছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড-এর তথ্যানুযায়ী, আজ সকালে দিল্লির সামগ্রিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৩৬৭, যা ‘খুব খারাপ’ বিভাগের মধ্যে পড়ে। সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে উঠে এসেছে ঘাজিয়াবাদের নাম, যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছেছে ৩০১। এই শহরের লোনি অঞ্চলে বাতাসের মান আরও খারাপ, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৩৫২— যা ‘অত্যন্ত খারাপ’ স্তরের খুব কাছাকাছি। এছাড়া সঞ্জয় নগরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ২৮৮, ইন্দিরাপুরমে ২৮০ এবং বসুন্ধরায় ২৮৪ রেকর্ড করা হয়েছে।
নয়ডার অবস্থাও কম উদ্বেগজনক নয়। সেক্টর ১২৫-এ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৩৩৭, সেক্টর ১১৬-এ ২৬৯, সেক্টর ১-এ ২৫৭ এবং সেক্টর ৬২-তে ২১৮। দিল্লির মধ্যে সবচেয়ে দূষিত এলাকা ছিল আনন্দ বিহার, যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স পৌঁছেছে ৩৬৫। ওয়াজিরপুরে ৩৩৩, বাওয়ানায় ৩০৬ এবং মুন্ডকায় ২৮৩ রেকর্ড হয়েছে।
দূষণের মানদণ্ড অনুযায়ী, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স যদি ০-৫০ হয় তবে তা ‘ভাল’, ৫১-১০০ হলে ‘সন্তোষজনক’, ১০১-২০০ হলে ‘মাঝারি’, ২০১-৩০০ হলে ‘খারাপ’, ৩০১-৪০০ হলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১-৫০০ হলে তা ‘অত্যন্ত খারাপ’ বা ‘গম্ভীর’ ধরা হয়।
পরিবেশবিদদের মতে, এই দূষণের পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে বায়ুর গতির কমে যাওয়া এবং ক্রমাগত কমতে থাকা তাপমাত্রা। এর ফলে বাতাসে দূষক কণাগুলি জমে থেকে পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে, যা বিশেষভাবে ক্ষতিকর শিশু ও প্রবীণদের জন্য।
এই পরিস্থিতিতে দীপাবলির সময়ে আতশবাজি পোড়ানো হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ এবং প্রশাসন। ফলে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতা পালন করা এখন অত্যন্ত জরুরি।

