মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার তিন সন্তানের জননী, মারধর করে চুল কেটে দিল পাষণ্ড স্বামী

সোনামুড়া, ১৫ অক্টোবরঃ
ধনপুর বিধানসভা এলাকায় ফের ঘটল মধ্যযুগীয় নৃশংসতা। যাত্রাপুর থানা এলাকার কাইচ্চাখলা এডিসি ভিলেজে এক গৃহবধূকে অমানবিকভাবে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় পুরো এলাকা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত গৃহবধূর নাম শাহানা আক্তার (৩০)। তার বাপের বাড়ি যাত্রাপুর থানার পূর্ব পাহাড়পুর পঞ্চায়েত এলাকায়। পিতা জামাল উদ্দিন ইতিমধ্যেই যাত্রাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিযুক্ত জামাই জসিম মিয়ার বিরুদ্ধে।
ঘটনা ঘটেছে ১৫ই অক্টোবর সকালে। অভিযোগ অনুযায়ী, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রী শাহানার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় জসিম মিয়া। বেধড়ক মারধরের ফলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন শাহানা। এরপর ধারালো দা দিয়ে তার মাথার চুল কেটে ফেলে অভিযুক্ত স্বামী এবং বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সেই দৃশ্য দেখায় বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি দেখে প্রতিবেশীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা গৃহবধূর বাপের বাড়িতে খবর পাঠায়। খবর পেয়ে শাহানার পিতা জামাল উদ্দিন ও আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে এসে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কাঠালিয়া সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা যাত্রাপুর থানায় গিয়ে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়েছিল শাহানা আক্তার ও জসিম মিয়ার। বিবাহের কিছুদিন পর থেকেই জসিম মিয়া শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য স্ত্রীর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত। একাধিকবার জামাল উদ্দিন জামাইকে অর্থসাহায্য করলেও তার লোভ কমেনি। গত দুই বছর ধরে এক লক্ষ টাকা এনে দিতে চাপ সৃষ্টি করছিল জসিম, এবং টাকা না পেয়ে প্রায়ই স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করত বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় সমগ্র যাত্রাপুর এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে যাত্রাপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ধনপুর বিধানসভা এলাকায় এমন অমানবিক ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। এখন দেখার বিষয়, পুলিশ কত দ্রুত এই নৃশংস ঘটনার কিনারা করতে পারে।