ধর্মনগরে বিদ্যুৎ দপ্তরের সাঁড়াশি অভিযানে বিতর্ক, জেলা কংগ্রেস সভাপতির গ্রেপ্তারে চাঞ্চল্য

ধর্মনগর, ১৪ অক্টোবর : ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবার অব্যবস্থাপনা ও স্মার্ট মিটারের ত্রুটিজনিত গ্রাহক ভোগান্তি নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। সেই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার সকালে ধর্মনগরের নয়াপাড়া ও দেওয়ানপাশা এলাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের ভিজিল্যান্স টিম সাঁড়াশি অভিযান চালায়। তবে এই অভিযানের প্রক্রিয়া ও কর্মীদের আচরণকে কেন্দ্র করে মুহূর্তেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগ, অভিযানের সময় কিছু কর্মকর্তার ব্যবহার ছিল অসৌজন্যমূলক, যা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করে। আরও চাঞ্চল্যকর মুহূর্ত দেখা দেয় যখন ভিজিল্যান্স টিম কংগ্রেসের উত্তর জেলা সভাপতি দ্বিগবিজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়তেই কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকরা ধর্মনগর থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, কোনো নোটিশ বা বৈধ নথি ছাড়াই জেলা সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অভিযানের বিষয়ে থানার প্রশাসনকেও আগে থেকে অবহিত করা হয়নি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান থানার অফিসার-ইন-চার্জ মিনা দেববর্মা এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকার। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিদ্যুৎ দপ্তরের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার গোপেশ ঘোষ ঘটনার ব্যাখ্যায় বলেন, “পুরো ঘটনাটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ফল, যা ইতিমধ্যেই মিটমাট হয়ে গেছে।” একইসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক চয়ন ভট্টাচার্যও জানান, “দু’পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, প্রশাসনের উপস্থিতিতেই বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।”

তবুও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে — সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহক কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের এইভাবে হেনস্থা করার সাহস ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা কোথা থেকে পান? বিশ্লেষক মহলের মতে, যদি এই পদক্ষেপ কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রয়াস হয়, তবে তা সরকারের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ধর্মনগরের এই ঘটনা শুধু রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নয়, প্রশাসনিক স্তরেও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা ও ভোক্তা অধিকারের প্রশ্নে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে।