আফগান-পাক সীমান্তে সংঘর্ষে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত, তালেবান সরকারের আইএস অভিযোগ ও নারী সাংবাদিকদের নিয়ে নতুন প্রেস মিট

করাচি, ১২ অক্টোবর : আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত দুরন্দ লাইনে শনিবার রাতভর চলা সংঘর্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। রবিবার তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর হামলার জবাবে তালেবান এই প্রতিরোধমূলক অভিযান চালায়। যদিও কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে পরবর্তীতে ওই অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে সংঘর্ষের পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে তালেবান সরকার। মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-কে আশ্রয় দিচ্ছে এবং দেশটির খাইবার পাখতুনখাওয়ায় নতুন করে আইএস ঘাঁটি স্থাপন করেছে। তিনি আরও বলেন, করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর থেকে লোকজন এনে এই ঘাঁটিগুলোতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যেখান থেকে তেহরান ও মস্কোর হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং বর্তমানে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও সেখানে হামলার ছক তৈরি হচ্ছে।

মুজাহিদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাকিস্তানকে দ্রুত আইএসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের আফগানিস্তানের হাতে তুলে দিতে হবে অথবা দেশছাড়া করতে হবে, কারণ এই গোষ্ঠী কেবল আফগানিস্তানের জন্য নয়, বরং গোটা অঞ্চল এবং বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘও এর আগে সতর্ক করেছিল যে আফগানিস্তান-পাকিস্তান অঞ্চলে একাধিক সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বাড়ছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে আইএস-খোরাসান, যাদের প্রায় ২,০০০ সক্রিয় যোদ্ধা রয়েছে।

তালেবান মুখপাত্র আরও জানান, এই সংঘর্ষে তাদের প্রায় ২০ জন সদস্য নিহত বা আহত হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ তারা পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে দখল করেছে। পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি নতুন এক প্রেস কনফারেন্সের ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে এবার প্রথমবারের মতো নারী সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগে শুধু পুরুষ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রেস মিট হওয়ায় তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল।