আত্মনির্ভরতা মানে আমদানি বন্ধ নয়, বরং ঘরোয়া উৎপাদনকে অগ্রাধিকার : মোহন ভাগবত

নাগপুর, ২ অক্টোবর: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরসঙ্ঘচালক ড. মোহন ভাগবত বৃহস্পতিবার বিজয়াদশমীর ভাষণে আত্মনির্ভর ভারতের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন, আত্মনির্ভরতা মানে আমদানি বন্ধ করা নয়, বরং ঘরোয়া উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

আরএসএস সদর দফতর, রেশিমবাগে দেওয়া এই ঐতিহ্যবাহী ভাষণে তিনি বলেন, নির্ভরতাকে বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। বিশ্ব আন্তঃনির্ভরশীলতার ওপর চলে, তবে স্বনির্ভর জীবন যাপন করাই প্রয়োজন। দেশের অর্থনীতিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে বাইরের চাপে সিদ্ধান্ত নিতে না হয়।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক আমদানি শুল্ক নীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “নিজস্ব স্বার্থে আমেরিকা যে ট্যারিফ আরোপ করেছে, তা আমাদেরও কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করছে। ভারতের উচিত এমন নীতি গ্রহণ করা যা জাতীয় স্বার্থ, সম্পদ ও চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।”

ড. ভাগবত বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) বিষয়ে সতর্ক করেন, বিশেষ করে সেই সব খাতে যেখানে ভারত নিজেই সফল হতে পারে। তিনি বলেন, “লো-টেক শিল্পে যেখানে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্ভব, সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ দেশের স্বার্থে নয়।”

তিনি অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, “বিশ্বজুড়ে নির্বাচিত সরকারগুলোর বিরুদ্ধে অপচেষ্টা চলছে, ভারতও তার বাইরে নয়।” তিনি নাগরিক সচেতনতা ও ঐক্যের ওপর জোর দেন।

তিনি অবৈধ অভিবাসন ও ধর্মান্তরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া জনসংখ্যাগত ভারসাম্যহীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে নকশালবাদ, সমাজে বিভাজন এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রবণতারও বিরুদ্ধাচরণ করেন।

উত্তরাখণ্ড সহ হিমালয়ের বিভিন্ন রাজ্যে ক্লাউডব্রাস্ট, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও হিমবাহ গলনের প্রসঙ্গ টেনে ভাগবত বলেন, হিমালয়ে এই ধরনের দুর্যোগ ভারতসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সতর্কবার্তা।

সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলায় ধর্ম পরিচয় জেনে ২৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঘটনার পর সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কে বন্ধু আর কে শত্রু—তা এখন স্পষ্ট।

ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন স্মরণ করে বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে গাঁধীজির অবদান অমূল্য।

হিন্দু সমাজকে ঐক্যের ডাক
ভাগবত বলেন, বর্তমানে হিন্দু সমাজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই সব চ্যালেঞ্জ একত্রিত হয়ে মোকাবিলা করতে হবে।