সীমান্তে তাণ্ডবের অভিযোগ, বিএসএফের মারধরে গুরুতর জখম যুবক

বক্সনগর, ২৬ সেপ্টেম্বর: সীমান্তবর্তী আশাবাড়ি এলাকায় আবারও বিএসএফের তাণ্ডবের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার রাতে ২২ বছরের এক যুবককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গুরুতর জখম অবস্থায় বর্তমানে ওই যুবক আগরতলার ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কলমচৌড়া থানাধীন আশাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত যুবক তুষার মিঞা (২২) পেশায় একজন দর্জি। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও দোকান বন্ধ করে রহিমপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় ৪৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের কয়েকজন জওয়ান হঠাৎই তার উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কোনো কারণ ছাড়াই শুরু হয় নির্মম প্রহার। পরবর্তীতে তাকে টেনে-হিঁচড়ে সীমান্তবর্তী কাঁটাতারের কাছে নিয়ে গিয়ে আবারো অমানবিকভাবে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তুষার।
তার আর্তচিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সীমান্তে প্রায়ই সাধারণ মানুষ বিনা কারণে বিএসএফের অত্যাচারের শিকার হন। এদিনও কোনো দোষ ছাড়াই একজন যুবককে এভাবে পেটানো হলো কেন, তার উত্তর নেই কারও কাছে।

ঘটনার খবর পেয়ে আশাবাড়ি পঞ্চায়েত প্রধান ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত যুবককে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেন। প্রথমে তাকে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শ্যাম দেববর্মা তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তড়িঘড়ি ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে রেফার করেন। চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, তুষারের শরীরের একাধিক স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, বিশেষত হাত ও কোমরের পেছনে মারাত্মক চোট লেগেছে।

এই ঘটনার জেরে আশাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাদের হুঁশিয়ারি, যদি অবিলম্বে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ না হয় তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন তারা। বর্তমানে গুরুতর আহত তুষার মিঞা হাসপাতালের শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। ঘটনার পর থেকে সীমান্তবর্তী এলাকায় আতঙ্ক ও অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।