অঞ্জলি সরকারের মর্মান্তিক মৃত্যু : শোকস্তব্ধ রাজ্য, মৃতার বাড়িতে ছুটে গেলেন অর্থমন্ত্রী, বাম-কংগ্রেস প্রতিনিধি দল, এএসআই সাময়িক বরখাস্ত, গ্রেফতার না হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানাবে কংগ্রেস

উদয়পুর, ২০ সেপ্টেম্বর : গৃহবধূ অঞ্জলি সরকারের মর্মান্তিক মৃত্যুকে ঘিরে উত্তাল গোমতী জেলায় মির্জা ও তার আশপাশের এলাকা। গতকাল ঘটে যাওয়া নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে এবং মৃতার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ছুটে যান অঞ্জলি সরকারের বাড়িতে। শোকস্তব্ধ পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে এবং ঘটনার ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তাঁরা।

আজ দুপুরে মির্জায় মৃতার বাড়িতে যান রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, বিজেপির গোমতী জেলার সভানেত্রী সবিতা নাগ, কাঁকড়াবন মন্ডলের সভাপতি এবং গোমতী জেলার পুলিশ সুপার। তাঁরা অঞ্জলি সরকারের স্বামী পঙ্কজ সরকার সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিস্তারিত শুনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সাংবাদিকদের সামনে মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, গতকালের ঘটনা রাজ্যের মানুষ সবাই জানেন। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে কাঁকড়াবন থানার এএসআই সঞ্জয় সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার মৃতার বাড়িতে না যাওয়ায় মানুষজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কারণ, তাঁর ভাতিজা মান্না মজুমদার এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্তদের একজন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে, বিকেলে বামফ্রন্টের একটি বিধায়ক প্রতিনিধি দলও মৃতার বাড়িতে যান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন উপ বিরোধী দলনেতা শ্যামল চক্রবর্তী, বিধায়ক শৈলেন্দ্র চন্দ্র নাথ, রামু দাস, সুদীপ সরকার এবং সিপিআই(এম)-এর গোমতী জেলা সম্পাদক পরিমল দেবনাথ, উদয়পুর মহকুমা সম্পাদক দিলীপ দত্ত, নিতাই বিশ্বাস, নিখিল দাস সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তাঁরা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দ্রুত তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি, রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।

অন্যদিকে, কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ ও বীরজিৎ সিনহা সহ কংগ্রেস প্রতিনিধি দলও আজ মৃতার বাড়িতে যান। পরে তাঁরা গোমতী জেলার পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়ে ডিজি-র সাথেও বৈঠক করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুদীপ রায় বর্মণ বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জড়িত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। যদি আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার না করা হয় তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানাবো।

রাজনৈতিক মহল থেকে প্রশাসনিক মহল সব পক্ষের চাপের মুখে পুলিশ কত দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন রাজ্যের মানুষ। মৃতার পরিবারের একমাত্র চাওয়া ন্যায়বিচার।