অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব নির্ধারণে নেপালে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, জেনারেশন জেড-এর একক প্রার্থী সুসিলা কার্কি

কাঠমান্ডু, ১১ সেপ্টেম্বর: নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল, নেপালি সেনাবাহিনীর প্রধান অশোকরাজ সিগডেল এবং জেনারেশন জেড আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব নির্ধারণ করা। সূত্রের খবর, জেনারেশন জেড আন্দোলনকারীরা সাবেক প্রধান বিচারপতি সুসিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।

জেনারেশন জেড এবং নেপালি সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনায় সরাসরি নির্বাচিত নির্বাহী ব্যবস্থা চালু, নতুন সংসদে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ, ১৯৮৯ সাল (২০৪৬ বিক্রম সংবৎ) থেকে শুরু করে সরকারি পদে থাকা সব কর্মকর্তার সম্পদের তদন্তসহ একাধিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি দুর্নীতির মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং সংসদ সদস্যদের মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ সীমিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) দলের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল ‘প্রচণ্ড’ একটি ১০ দফা বিবৃতি প্রকাশ করে জেনারেশন জেড আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান। তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাগুলির স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলেন। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেন যে, সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে আন্দোলন করলে এর সুযোগ নিতে পারে পশ্চাদপদ ও অগণতান্ত্রিক শক্তি।

এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে নেপালি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে যে, রাজধানী কাঠমান্ডু, ললিতপুর এবং ভক্তপুর জেলায় কারফিউ এবং ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর (ভাদ্র ২৭, ২০৮২) সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবা ও যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জনগণের দৈনন্দিন জীবন কিছুটা স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা এবং বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। সেনাবাহিনী নাগরিকদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চলাফেরা ও দৈনন্দিন প্রয়োজনে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছে।

এই আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণ নেপালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সুসিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আনার প্রস্তাব ও আলোচনা নেপালের রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক মোড় নিতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।