রাহুল গান্ধীর মালয়েশিয়া সফর নিয়ে বিজেপির তীব্র আক্রমণ

নয়াদিল্লি, ৭ সেপ্টেম্বর: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন কংগ্রেস নেতা ও সংসদের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর মালয়েশিয়া সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য একাধিক পোস্টে রাহুলের এই সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কংগ্রেসের ‘নেতৃত্বহীনতা’ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বিহারের রাজনীতির গরম হাওয়া সহ্য করতে না পেরে কংগ্রেস যুবরাজ আবার ছুটিতে! নাকি এটা কোনও গোপন বৈঠক? সাধারণ মানুষ যখন বাস্তব সমস্যায় জর্জরিত, রাহুল গান্ধী তখন নিখোঁজ হয়ে বেড়াতে ব্যস্ত।”

মালব্য আরও বলেন, “১২ বছর আগে দেশের এমন অবস্থা ছিল যে, প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের অফিসিয়াল হ্যান্ডল থেকেও এমন বার্তা দিতে হয়েছিল, যা কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ করে।” তিনি ২০১১ সালের একটি টুইট উল্লেখ করেন, যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, “আমি কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বে রাহুল গান্ধীর অধীনে কাজ করতে খুশি হব – প্রধানমন্ত্রী।” এই টুইটকে তুলে ধরে বিজেপি বলছে, এটি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিভ্রান্তি ও দুর্বল নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।

উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধী ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদব সম্প্রতি বিহারে ‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’ সম্পন্ন করেছেন। এই যাত্রায় তারা নির্বাচন কমিশনের এসআইআর-এর বিরোধিতা করে একে “অগণতান্ত্রিক” ও “ভোট চুরি”-র হাতিয়ার বলে অভিযোগ তোলেন। যাত্রা শেষ হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর।

রাহুল গান্ধীর বিদেশ সফর আগেও বহুবার রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন বা নির্বাচনের সময় তার বিদেশযাত্রা নিয়ে বিজেপি প্রায়শই প্রশ্ন তোলে। বাজেট অধিবেশনের সময় রাহুলের একাধিকবার ভিয়েতনাম সফর নিয়েও বিজেপি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রবি শঙ্কর প্রসাদ প্রশ্ন তোলেন, “রাহুল গান্ধী কি ভিয়েতনামে বেশি সময় কাটাচ্ছেন? হঠাৎ এত আগ্রহের কারণ কী?”

বিজেপি আরও অভিযোগ করে যে, মনমোহন সিং-এর মৃত্যুর পরে সাত দিনের জাতীয় শোক চলাকালীনও রাহুল গান্ধী বর্ষবরণ করতে ভিয়েতনাম চলে যান। সেই সময়ও তার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অমিত মালব্য বলেন, “একজন বিরোধী দলনেতা হিসেবে সংসদ চলাকালীন কিংবা শোকপর্বে এমনভাবে গোপনে বিদেশ সফর করা জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক শালীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”

এই সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি রাহুল গান্ধীর বিদেশ সফরগুলিকে কেবল ‘ছুটি’ বা ‘ব্যক্তিগত সফর’ বলে মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, এ ধরনের সফর কংগ্রেস নেতার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও দেশের প্রতি অবহেলা প্রকাশ করে।