ওয়াশিংটন/বেইজিং, ৫ সেপ্টেম্বর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিস্ফোরক মন্তব্যে বলেছেন, “ভারত ও রাশিয়াকে আমরা চীনের কাছে হারিয়ে ফেলেছি।” চীনের তিয়ানজিনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনের পর ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।
ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করে ট্রাম্প লেখেন, “দেখে মনে হচ্ছে, আমরা ভারত ও রাশিয়াকে সবচেয়ে গভীর, অন্ধকার চীনের কাছে হারিয়ে ফেলেছি। তাদের একসাথে দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ কামনা করছি!”
এই পোস্টের সঙ্গে তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর একটি ছবিও শেয়ার করেন, যা সম্মেলনের সময় তোলা। ওই সম্মেলনে মোদী, পুতিন ও শি-র মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও দৃঢ় বন্ধুত্বের প্রকাশ বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে পশ্চিমি দুনিয়ায় চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বছরের পর বছর ধরে একতরফা। ভারত আমাদের কাছ থেকে খুব কম কিছু কেনে, কিন্তু আমাদের দেশে বিশাল পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে। এটা একেবারে একপাক্ষিক সম্পর্ক।”
তিনি দাবি করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেও, ভারত মার্কিন পণ্যের জন্য কোনও বড় বাজার নয়।
মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে। এই হার বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূলত রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে ২৭ আগস্ট থেকে।
সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেন, মোদী ও ট্রাম্পের একসময়ের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব এখন আর আগের মতো নেই। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্পের ‘আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতি’ দুই দেশের সম্পর্ককে “বহু দশক পিছিয়ে দিয়েছে।”
একই সুরে কথা বলেন আরেক প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। তাঁর মতে, “ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রকে এখন মিত্র দেশগুলিই বড় ঝুঁকির উৎস হিসেবে দেখছে। আর চীনকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকার প্লেয়ার হিসেবে গ্রহণ করছে।”
সুলিভান আরও বলেন, “চীনের গ্লোবাল ইমেজ এখন আমেরিকার চেয়ে অনেক উন্নত। এক বছর আগেও যে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পাশে ছিল, তারা এখন চীনকে বেশি বিশ্বাস করছে। মার্কিন ব্র্যান্ড এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতির ময়দানে প্রায় ‘টয়লেটে’ চলে গেছে।”

