নয়াদিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর , শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু দেশের ৪৫ জন গুণী শিক্ষকদের হাতে জাতীয় শিক্ষক সম্মান প্রদান করলেন। রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এই সম্মান তুলে দেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ ও ২১ জন নারী শিক্ষক ছিলেন, যাঁরা মহানগর, শহরতলি ও প্রত্যন্ত গ্রামের বিদ্যালয় থেকে মনোনীত হয়েছেন। এই শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবনে উদ্ভাবনী পদ্ধতি ও ইতিবাচক প্রভাবের জন্য তিন স্তরের কঠোর নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাছাই করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন, “শিক্ষা যেমন মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য, তেমনি এটি তাকে আত্মনির্ভর ও সক্ষম করে তোলে। একজন শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের চরিত্র গঠনের দায়িত্বও নেন, যা জাতি নির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকরা যদি ভালবাসা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পাঠদান করেন, তবে তারাই ছাত্রদের জীবনে সাফল্যের পথ তৈরি করে দেন। শিক্ষকরা এমনভাবে পড়ান যাতে পড়াশোনার প্রক্রিয়াটি আনন্দদায়ক ও ফলপ্রসূ হয়। স্মার্ট বোর্ড কিংবা স্মার্ট ক্লাসরুমের চেয়ে ‘স্মার্ট শিক্ষক’ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ — যিনি ছাত্রদের প্রয়োজন বুঝতে পারেন এবং মানবিকতার সঙ্গে পাঠদান করেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, মেয়েদের শিক্ষায় বিনিয়োগ মানেই পরিবার, সমাজ ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য অমূল্য বিনিয়োগ। তিনি বলেন, “মেয়েদের সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা দেওয়াই নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের সবচেয়ে কার্যকর পথ।” রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, নৈতিক ও সংবেদনশীল ছাত্ররা কেবল প্রতিযোগিতামূলক ও আত্মকেন্দ্রিক ছাত্রদের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি মুর্মু নিজের শিক্ষক জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, “এটি ছিল আমার জীবনের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ সময়। সংবেদনশীল ও বিবেকবান শিক্ষকরা ছাত্রদের মধ্যে আত্মমর্যাদা ও নিরাপত্তার বোধ তৈরি করেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে গ্লোবাল নলেজ সুপারপাওয়ার হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে। এর জন্য আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা এবং দক্ষতা শিক্ষার তিনটি ক্ষেত্রেই সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষকরা যেন বিশ্বের সেরা শিক্ষকদের কাতারে থাকেন, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”

