নয়াদিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর: ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষিক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে নীতি আয়োগ বৃহস্পতিবার ‘আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে ডালের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার কৌশল ও পথ’ শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে দেশের ডাল উৎপাদনের বর্তমান অবস্থা, সম্ভাবনা এবং আত্মনির্ভরতার রোডম্যাপ নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভবিষ্যতে ভারতের ডাল উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ভারত বিশ্বে সর্ববৃহৎ ডাল উৎপাদক এবং ভোক্তা দেশ। ডাল ভারতীয় খাদ্যতালিকার অপরিহার্য অংশ, যা স্বল্পমূল্যে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে—এগুলি মানবদেহ ও পশুপালনের জন্য সমানভাবে উপকারী।
নীতি আয়োগের মতে, দেশে প্রায় পাঁচ কোটি কৃষক পরিবার ডাল চাষের সঙ্গে জড়িত, ফলে এই খাত কেবল খাদ্য নিরাপত্তাই নয়, গ্রামীণ অর্থনীতির ভিতও মজবুত করে। আত্মনির্ভর ভারতের ভিশনে এই খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-২৬-এ ঘোষণা করা হয়েছে ছয় বছরের একটি ‘মিশন ফর আত্মনির্ভরতা ইন ডাল’, যেখানে তুর , উড়দ, ও মসুর ডালের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকার ফসলের ঘাটতি, মূল্য ওঠানামা ইত্যাদি মোকাবেলায় প্রাইস স্টেবিলাইজেশন ফান্ড (পিএসএফ)-এর আওতায় তুর, উড়দ, চানা, মুগ ও মসুর ডালের বাফার স্টক বজায় রাখে। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্যমতে, সরকারের হাতে ১৫.৭৫ লক্ষ মেট্রিক টনডালের স্টক রয়েছে। তুর ও উড়দের শুল্কমুক্ত আমদানির অনুমতি ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের তৃতীয় পূর্বাভাসে সরকার জানিয়েছে, ডাল উৎপাদন হবে প্রায় ২৫২.৩৮ এলএমটি, যেখানে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২৯৯ এলএমটি। এর আগের বছরে (২০২৩-২৪) উৎপাদন ছিল ২৪২.৪৬ এলএমটি, যা ৫০.০৪ এলএমটি কম।
ডাল চাহিদা পূরণে ২০২৩-২৪ সালে ৪৭.৩৯ এলএমটি ডাল আমদানি করা হয়, যেখানে রপ্তানি ছিল প্রায় ৬ এলএমটি। ২০২২-২৩ সালের তুলনায় উৎপাদন কমে প্রায় ১৮.১২ এলএমটি হয়েছে। তবে রপ্তানি বেড়ে ৭.৬৩ এলএমটি-এ পৌঁছেছে, যেখানে ২০২১-২২ সালে রপ্তানি ছিল ৩.৮৭ এলএমটি। ডালের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য -র আওতায় ২০২৪-২৫ বিপণন মরসুমে ২.৪৬এলএমটি তুর কেনা হয়েছে মার্চ ২৫ পর্যন্ত।
নীতি আয়োগের প্রতিবেদনে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটক-এর ৮৮৫ জন কৃষকের উপর সমীক্ষা করা হয়েছে।

