(Update) মুম্বাইয়ে ৩৪টি বোমা ও ৪০০ কেজি আরডিএক্স! ‘লস্কর-ই-জিহাদি’-র হুমকির পর রাজ্যজুড়ে হাই অ্যালার্ট

মুম্বাই, ৫ সেপ্টেম্বর : গণেশ বিসর্জনের ঠিক আগের রাতে মুম্বাই শহর কেঁপে উঠল ভয়াবহ বোমা হামলার হুমকি-তে। ‘লস্কর-ই-জিহাদি’ নামে একটি সংগঠনের তরফ থেকে মুম্বাই ট্রাফিক পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানানো হয়, ৩৪টি গাড়িতে ৩৪ জন ‘হিউম্যান বম্ব’-কে বসানো হয়েছে, যাদের সঙ্গে রয়েছে ৪০০ কেজি আরডিএক্স। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটাবে, যার ফলে এক কোটিরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার থেকেই শহরজুড়ে শুরু হয়েছে আনন্ত চতুর্দশী উপলক্ষে গণেশ বিসর্জন, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসের এমন হুমকি প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, হুমকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং পুরো রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, মন্দির ও বিসর্জনের ঘাটে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।

এই হুমকি এমন এক সময়ে এলো, যখন গত কয়েক মাস ধরেই মুম্বাই ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় একাধিক ভুয়া বোমা হুমকি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সোমবার, মহারাষ্ট্রের থানে জেলার কালওয়া রেলস্টেশনে বোমা পুঁতেছে বলে ফোন করে হুমকি দেয় ৪৩ বছর বয়সী রূপেশ মাধুকর রানপিসে। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ, এবং সেটি ভুয়া হুমকি বলে প্রমাণিত হয়।

আগস্ট মাসে, দক্ষিণ মুম্বাইয়ের গিরগাঁও এলাকায় অবস্থিত ইসকন মন্দির-এ একটি বোমা হামলার ইমেল হুমকি আসে। সেই ইমেলকে ঘিরে রাতে বম্ব স্কোয়াড ও পুলিশের যৌথ অভিযান চালানো হলেও কিছুই মেলেনি। সেটিও ভুয়া হুমকি বলে ঘোষণা করা হয়। জুলাই ২৫ তারিখে মুম্বাই বিমানবন্দরের টার্মিনাল ২-এ বোমা রাখা হয়েছে বলে ফোন করে হুমকি দেয়া হয়েছিল। তখনও নিরাপত্তা জোরদার করে তল্লাশি চালানো হয়, তবে কোনও বিস্ফোরক মেলেনি।

মুম্বাই পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, লস্কর-ই-জিহাদি নামক সংগঠনটির পরিচয় এবং হুমকির উৎস অনুসন্ধান চলছে। সাইবার সেল, এটিএস, এবং গোয়েন্দা বিভাগ এই বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করছে। পুলিশ জনসাধারণকে গুজব না ছড়ানোর এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলেই পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ালে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

গণেশ ভক্ত ও শহরবাসীর কাছে অনুরোধ— আতঙ্ক নয়, সতর্ক থাকুন। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।