পাঞ্জাবের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান

নয়াদিল্লি, ২ সেপ্টেম্বর:পাঞ্জাবের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে কেন্দ্র সরকারের তরফে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। রবিবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কৃষি খাতের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার সময় তিনি এই বার্তা দেন।

মন্ত্রী চৌহান জানান, পাঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন এবং খুব শীঘ্রই তিনি নিজে রাজ্যের বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাবেন। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থাকতে আমি সরাসরি এলাকাগুলো পরিদর্শন করব এবং পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র দেখে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্য নিশ্চিত করব।”

সরকারি তথ্যমতে, ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই বন্যায় এখনো পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং ১২টি জেলার বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে সীমান্তবর্তী পাঠানকোট জেলায়। এছাড়া এখনও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।

জালন্ধর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে মোট ২.৪৬ লক্ষ মানুষ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গুরুদাসপুর জেলাতেই ১.৪৫ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত ১৫,৬০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ব্যাপক বর্ষণে রাজ্যের পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে।

আবহাওয়াবিদ পুনীত কৌর কিংরা জানিয়েছেন, চলতি বর্ষায় পাঞ্জাবে গত ৫৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। হাজার হাজার একর চাষের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে, এবং শত শত গবাদি পশুও মারা গেছে। ঘগ্গর, টাংরি ও মার্কান্ডা নদীর জল উপচে পড়া এবং রোপড় থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলে অমৃতসর, ফাজিলকা, ফিরোজপুর, পাঠানকোট, হোশিয়ারপুর, কপুরথলা, তরণতারণ, পটিয়ালা ও জালন্ধর জেলার বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান একে রাজ্যের সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা বলে অভিহিত করে বলেছেন, “এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনীয় সমস্ত সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।” রাজ্য ও কেন্দ্র মিলিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট বলে জানা গেছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী কৃষি ও উদ্যানপালন খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি এবং জলাধারগুলির অবস্থাও খতিয়ে দেখেন। পাঞ্জাবে কৃষির উপর বন্যার প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে।