নতুন দিল্লি, ২৭ আগস্ট :ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জেরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক বুধবার (২৭ আগস্ট, ২০২৫) থেকে কার্যকর হয়েছে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের উপরে মোট শুল্কের হার দাঁড়াল ৫০ শতাংশে।
এই প্রসঙ্গে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি একে মোদি সরকারের “তথাকথিত বিদেশনীতি”-র ফলাফল বলে আখ্যা দিয়েছেন, যা দেশের লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান হারানোর কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (যোগাযোগ) জয়রাম রমেশ একে ‘ট্রাম্প ডাবল ট্যারিফ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং জানান, এতে ভারতের শ্রমনির্ভর রপ্তানি শিল্প যেমন—বস্ত্র, রত্ন ও গয়না, চামড়া, সামুদ্রিক পণ্য এবং প্রকৌশল খাতে বড় ধাক্কা আসবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৬ আগস্ট একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন, রাশিয়া থেকে “পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ” তেল আমদানির কারণ দেখিয়ে। এর আগে, ৩১ জুলাইও ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।
এই পটভূমিতে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট, ২০২৫) নয়াদিল্লিতে এক বক্তব্যে ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতিভেনি লিগামামাদা রাবুকা বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে জানিয়েছেন, “কেউ একজন খুব একটা খুশি নন আপনার উপর।” তবে, তিনি আশ্বাস দেন, “আপনি এত বড় দেশ, এই ধরনের অস্বস্তি মোকাবিলা করার ক্ষমতা আপনার রয়েছে।”
ভারতের ‘স্বদেশী’ অভিযানের পটভূমিতে, প্রধানমন্ত্রী মোদি মঙ্গলবার দেশবাসীকে “ভোকাল ফর লোকাল” হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। রপ্তানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন ও চাহিদার উপর জোর দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী রাবুকা তিনদিনের সফরে রবিবার ভারতে পৌঁছান। সোমবার দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয় এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও সমন্বয়ের জন্য যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।
‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স’-এ ‘ওসেন অফ স্পেস’ শীর্ষক ভাষণে রাবুকা বলেন, এই শান্তির বার্তা গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এখন তাঁদের লক্ষ্য। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে মোদিও এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেছেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গেও এর আগের আলোচনায় এই বিষয়টি উঠে এসেছিল বলে জানান রাবুকা। তিনি বলেন, “বিশ্ব যেন এক পরিবার, আর পরিবারে ছোটদের কষ্ট হলে বড়রাও মনোযোগ দেয়—এটাই আমাদের দর্শন।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত ও ফিজি মিলে এই ‘ওসেন অফ স্পেস’ ধারণাকে কেবলমাত্র প্যাসিফিক অঞ্চলে নয়, সমগ্র বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বাস্তবায়িত করতে পারে।”
মোদি-রাবুকা বৈঠকে উভয় দেশই ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, সমুদ্র নিরাপত্তা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মতো বহু ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার করে।

