মুম্বই, ২৩ আগস্ট: শিল্পপতি অনিল অম্বানির বিরুদ্ধে ব্যাংক প্রতারণার মামলায় শনিবার সকালে তাঁর মুম্বইয়ের বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতারণার পরিমাণ প্রায় ৩,০৭৩ কোটি টাকা।
সকাল ৭টা নাগাদ সিবিআই-এর সাত থেকে আট জন আধিকারিক অনিল অম্বানির বাসভবন ‘সিওউইন্ড’, কফি প্যারেডে পৌঁছান এবং তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। ওই সময় অম্বানি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরাও বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন।
সিবিআই এই মামলায় অনিল অম্বানি, তাঁর কোম্পানি রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে একটি নতুন এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। এই এফআইআরটি দায়ের হয়েছে দিল্লিতে, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে।
এসবিআই জানায়, অনিল অম্বানির নেতৃত্বাধীন আরসিওএম প্রতারণা করেছে ৩,০৭৩ কোটির। ব্যাংকটি এই অ্যাকাউন্ট ও এর প্রোমোটারদের “প্রতারক”হিসাবে প্রথম ঘোষণা করে ১০ নভেম্বর, ২০২০-এ এবং সিবিআই-এ অভিযোগ দাখিল করে ৫ জানুয়ারি, ২০২১-এ। তবে দিল্লি হাইকোর্টের এক “স্টেটাস কুও” নির্দেশের কারণে ওই অভিযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি লোকসভায় একটি লিখিত উত্তরে অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরি জানান, এসবিআই তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি এবং রিজার্ভ ব্যাংকের নির্দেশিকা অনুযায়ী ১৩ জুন, ২০২৫-এ আরসিওএম এবং অনিল অম্বানিকে আবার “প্রতারক” হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। এরপর আরসিওএম-এর রেজোলিউশন প্রফেশনাল বিষয়টি ১ জুলাই, ২০২৫-এ বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানায়।
এসবিআই জানায়, তাদের মোট ঋণ-সম্পৃক্ত আর্থিক সংস্পর্শের পরিমাণ ২,২২৭.৬৪ কোটি এবং অতিরিক্তভাবে ৭৮৬.৫২ কোটির ব্যাংক গ্যারান্টি রয়েছে আরসিওএম-এর কাছে।
আরসিওএম বর্তমানে দেউলিয়া প্রক্রিয়া-র মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং একটি রেজোলিউশন প্ল্যান ৬ মার্চ, ২০২০-এ এনসিএলটি মুম্বইয়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যা এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও, অনিল অম্বানির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু করেছে এসবিআই , যা এনসিএলটি মুম্বইতে বিচারাধীন।
এর আগে, ২৭ মার্চ, ২০২৩-এ সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, প্রতারক ঘোষণা করার আগে ঋণগ্রহীতাকে নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ দিতে হবে। এরপর এসবিআই ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩-এ পূর্বতন প্রতারক ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু আরবিআই-এর ১৫ জুলাই, ২০২৪-এর সার্কুলার মেনে নতুন করে শ্রেণিবিন্যাস করে এবং আবারও ২৪ জুন, ২০২৫-এ প্রতারক হিসেবে রিপোর্ট করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, সিবিআই এফআইআর দায়ের করে এবং আজকের এই অভিযান চালায়।
সূত্র জানায়, শুধুমাত্র এই একটি নয়, অনিল অম্বানি ও তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাংক প্রতারণা মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি । মোট প্রতারণার পরিমাণ ১৭,০০০ কোটিরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

