সাম্ভালের শাহি জামে মসজিদ–শ্রী হরিহর মন্দির বিতর্কে স্থিতাবস্থার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি, ২২ আগস্ট – উত্তরপ্রদেশের সাম্ভালে অবস্থিত শাহি জামে মসজিদ ও শ্রী হরিহর মন্দির সংক্রান্ত বিতর্কে সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার উভয় পক্ষ মুসলিম ও হিন্দু —কে আগামী শুনানি পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ন্যায়মূর্তি পি.এস. নারসিমহা ও অতুল এস. চন্দুরকরের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে বলেন, পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত বিবাদমান স্থানে কোনও রকম পরিবর্তন আনা যাবে না।

এই শুনানি ছিল মসজিদ কমিটির করা একটি বিশেষ অনুমতি আবেদনের (এসএলপি) পরিপ্রেক্ষিতে, যা এলাহাবাদ হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে চাঁদৌসি আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিতর্কিত স্থানে সমীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হয়।

মসজিদ কমিটির দাবি ছিল, ১৯৯১ সালের উপাসনার স্থান আইনঅনুযায়ী মামলাটি গ্রহণযোগ্য নয়, কিন্তু এলাহাবাদ হাই কোর্ট প্রাথমিকভাবে মনে করেছে যে, মামলাটি ওই আইনের আওতাভুক্ত নয়, কারণ এখানে‘প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও অবশেষ আইন, 1958 অনুসারে সম্পত্তিতে প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে, বিতর্কিত স্থানে যেকোনও পরিবর্তন বা কার্যকলাপ বন্ধ রাখতে হবে, অর্থাৎ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, এলাহাবাদ হাই কোর্ট এর আগে সেই দেওয়ানি পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয়, যেখানে বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছিল।

শাহি জামে মসজিদকে ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে, যখন হিন্দু বাদীরা অভিযোগ করেন যে, মসজিদটি প্রাচীন হরিহর মন্দিরের উপর নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে আদালতের নির্দেশে সমীক্ষা চলাকালীন সাম্ভালে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে, যাতে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।

সুপ্রিম কোর্ট তখনই বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে এবং নির্দেশ দেয়, এলাহাবাদ হাই কোর্ট মসজিদ কমিটির পিটিশন পর্যালোচনা না করা পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।

মসজিদ কমিটির অভিযোগ, তাদের বক্তব্য শোনার সুযোগ না দিয়েই সমীক্ষার নির্দেশ জারি করা হয়, এবং একদিনে দু’বার সমীক্ষা চালানো হয় — প্রথমে আদেশের দিন এবং পরে ২৪ নভেম্বর, যখন হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

তবে এলাহাবাদ হাই কোর্ট মসজিদ কমিটির এই যুক্তি মানতে অস্বীকার করে এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার জানায়। হিন্দু পক্ষের দাবি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অ্যাডভোকেট হরিশঙ্কর জৈন এবং আরও সাতজন বাদী, তাঁরা বলেন, এই মসজিদটি ১৫২৬ সালে মোগল সম্রাট বাবরের আদেশে আংশিকভাবে ধ্বংস হওয়া হরিহর মন্দিরের উপর নির্মিত হয়েছে।