শিলচর, ২০ আগস্ট : বরাক উপত্যকা জনস্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিভাগের ঠিকাদাররা দীর্ঘ ২৩ মাস ধরে জল জীবন মিশন প্রকল্পে সম্পন্ন কাজের বিল না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে পাওনা পরিশোধের দাবিতে তারা মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
বরাক ভ্যালি জনস্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিভাগের ঠিকাদার সমিতি একটি স্মারকলিপি জেলা শাসক মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। এতে তারা জানান, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে “হার ঘর নল, হার ঘর জল” প্রকল্প শুরু হওয়ার পর বহু বেকার যুবক ও ইঞ্জিনিয়ার এই প্রকল্পে যুক্ত হয়ে আন্তরিকভাবে কাজ সম্পন্ন করেছেন। সরকারি নিয়ম মেনে তৃতীয় পক্ষ দ্বারা যাচাই সহ আইআইটি-র মতো প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষার পরও কাজ সন্তোষজনক বলে বিবেচিত হয়েছে।
তবে দীর্ঘ ২৩ মাসে এক টাকাও বিল পরিশোধ না হওয়ায় অনেক ঠিকাদার ঋণের বোঝায় জর্জরিত। “আমরা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে কাজ শেষ করেছি, অথচ বিল না পেয়ে তা শোধ করাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে,” স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন ঠিকাদাররা।
সমিতি তাদের স্মারকলিপিতে পাঁচ দফা মূল দাবি উত্থাপন করেছে। প্রথমত, তারা অবিলম্বে দীর্ঘ ২৩ মাস ধরে আটকে থাকা বকেয়া বিল পরিশোধের দাবি জানিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ঠিকাদারদের অভিযোগ, প্রকল্পে ১২% হারে জিএসটি ধার্য থাকা সত্ত্বেও তাদের কাছ থেকে ১৮% হারে কর আদায় করা হয়েছে, যা ৬% অতিরিক্ত—এই অতিরিক্ত পরিমাণ অর্থ ফেরতের দাবি জানানো হয়েছে। তৃতীয়ত, কাজের সময় উৎসে কেটে রাখা সিকিউরিটি ডিপোজিট অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার দাবি উঠেছে। চতুর্থত, বিল আপলোডের জন্য ব্যবহৃত আইএমআইএস পোর্টালটি দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় রয়েছে—তারা এর দ্রুত পুনরায় চালুর আবেদন জানিয়েছেন। এবং পঞ্চমত, প্রকল্প পরিচালনার জন্য নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর-এর ঘনঘন পরিবর্তনে তারা কাজের গতি ও ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে, এই ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে “সহানুভূতিশীল ও মানবিক হস্তক্ষেপ” কামনা করেছেন যাতে ভবিষ্যতেও এই প্রকল্পে তারা অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত হন।
এই স্মারকলিপির কপি জল জীবন মিশনের মিশন ডিরেক্টর, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার (বরাক ভ্যালি জোন), সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (কাছাড় সার্কেল) সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছেও পাঠানো হয়েছে।

