আমি বিষয়টি দেখবো, পথকুকুর সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘিরে বিতর্কের মাঝে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির

নয়াদিল্লি, ১৩ আগস্ট : পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক ও ক্ষোভ ছড়ানোর মধ্যেই সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই বুধবার জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন।

বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ২০২৪ সালের একটি পিটিশন উত্থাপন করা হয়েছিল। তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, দিল্লির নাগরিক সংস্থাগুলি নিয়মিত স্টেরিলাইজেশন ও ভ্যাকসিনেশন করছে না। যার ফলে কুকুর কামড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। এই মামলায় জুলাই ২০২৪-এ নোটিশ ইস্যু করা হয়েছিল।

উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য সেই পিটিশনের প্রসঙ্গে ছিল, নাকি সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের যে রায়টি পশুপ্রেমী ও এনজিওদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে সেটির বিষয়ে, তা পরিষ্কার নয়। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও আর মহাদেবনের বেঞ্চ দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে পথকুকুরদের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

আদালত স্বত:প্রণোদিতভাবে কুকুর কামড়ানোর ঘটনা ও র‍্যাবিস সংক্রমণের রিপোর্টের ভিত্তিতে হস্তক্ষেপ করে নির্দেশ দেয়, আট সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি ও এনসিআর-এর সমস্ত পথকুকুর, তারা স্টেরিলাইজড হোক বা না হোক, আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। আদালতের এই মন্তব্যে বলা হয়, আপনাদের একটি অভিযান চালাতে হবে, কিছুটা বল প্রয়োগ করে হলেও; সমস্ত পথকুকুরদের ধরে ফেলতে হবে। সমাজকে পথকুকুরমুক্ত করতে হবে।

তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে পশুপ্রেমীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অনেকেই এই রায়কে ‘অমানবিক’ বলে আখ্যা দেন এবং দাবি করেন, এটি পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ (এবিসি) নিয়মাবলীর পরিপন্থী। উল্লেখ্য, এবিসি নিয়ম অনুযায়ী, স্টেরিলাইজড ও ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত পথকুকুরদের তাদের মূল এলাকায় ছেড়ে দিতে হয়; তাদের স্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তর করা যায় না।

এই রায় ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেট সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখানোর সময় ৪০-৫০ জন পশুপ্রেমী বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি দেখবেন বলে জানালেও, সুপ্রিম কোর্ট এখনো এই বিষয়টি চূড়ান্তভাবে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেনি। বিষয়টি এখন জাতীয় স্তরে এক উত্তপ্ত আলোচনার কেন্দ্রে।