ভারত তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির পথে : ট্রাম্পের ‘ডেড ইকোনমি’ মন্তব্যের জবাব মোদীর

বারাণসী, ২ আগস্ট : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার আবারও ভারতের অর্থনৈতিক দৃঢ়তা ও সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়ে জানিয়েছেন, দেশটি দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে। এই মন্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক “ডেড ইকোনমি” (মৃত অর্থনীতি) মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এসেছে, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন এবং ভারতকে “ডেড ইকোনমি” বলে কটাক্ষ করেন।

বারাণসীতে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে দেখা দিয়েছে অস্থিরতার বাতাবরণ। সব দেশ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট। এই প্রেক্ষাপটে ভারত তার আর্থিক স্বার্থে সচেতন থাকতেই হবে। আমরা তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হব, এই লক্ষ্য স্থির করে এগোতে হবে। তিনি জোর গলায় দাবি করেন, আমাদের সরকার দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষার জন্য সবকিছু করছে। যারা দেশের উন্নতি চায়, যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন, তাদের উচিত মতপার্থক্য দূরে রেখে ‘স্বদেশি’ পণ্যের প্রতি সংকল্প নেওয়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধুমাত্র ভারতীয়দের তৈরি জিনিস কিনব। দেশকে আত্মনির্ভর করতে গেলে ‘ভোকাল ফর লোকাল’ হতে হবে।

গত ৩১ জুলাই, ভারতের আমদানির ওপর প্রায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঠিক পরদিন ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, আমার কিছু যায় আসে না ভারত কী করে রাশিয়ার সঙ্গে। তারা চাইলে একসাথে নিজেদের ডেড ইকোনমিগুলোকে নিয়ে ডুবে যাক।

এদিন জনসভায় প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, অন্যায় ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মহাদেব তাঁর ‘রুদ্র রূপ’ দেখান। অপারেশন সিঁদুরে ভারত সেই রুদ্র রূপ দেখিয়েছে। যে ভারতকে আঘাত করবে, তাকে পাতাল লোকেও রেহাই দেওয়া হবে না।

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিরোধী দল, বিশেষ করে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির সমালোচনার জবাবে মোদী বলেন, পাকিস্তান কষ্ট পেয়েছে, সেটা বোঝা যায়। কিন্তু কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি পাকিস্তানের যন্ত্রণা সইতে পারছে না। পাকিস্তান কাঁদছে, আর কংগ্রেস-সমাজবাদী পার্টি কাঁদছে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য। তাঁরা অপারেশন সিঁদুরকে ‘তামাশা’ বলেছে। তাঁরা আমাদের সেনাবাহিনীর সাহসিকতাকে অপমান করছে।

তিনি আরও বলেন, ভোটব্যাংকের রাজনীতিতে সমাজবাদী পার্টিও পিছিয়ে নেই। তাঁরা প্রশ্ন করছে কেন ওই দিনে পহালগামে সন্ত্রাসবাদীদের হত্যা করা হল। তাহলে কি আগে ফোন করে অনুমতি নিতে হবে? সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সময় নষ্ট করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কংগ্রেস শাসনকালে বহুবার সন্ত্রাসবাদীদের নির্দোষ বলে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী একদিকে যেমন ভারতের অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও আত্মনির্ভরতার বার্তা দিয়েছেন, তেমনই সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। দেশের স্বার্থে ঐক্যের ডাক দিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।