আগরতলা, ১ আগস্ট : ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী লঙ্কামুড়াস্থিত ধানক্ষেত থেকে একটি সন্দেহভাজন ড্রোন উদ্ধার করে বিএসএফ। স্থানীয় শিশুরা খেলার সময় ধানক্ষেতে ড্রোনটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীকে খবর দেয়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি বিএসএফকে অবহিত করেন। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, নয়াদিল্লিস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনারের ত্রিপুরা সফরকালে ওই ড্রোন উদ্ধার হয়েছে। ফলে, নানাহ প্রশ্ন নিরাপত্তা পর্যবেক্ষকদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
সূত্রের খবর, বিএসএফ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ড্রোনটি উদ্ধার করেছে এবং তা আগরতলা এয়ারপোর্ট থানার হাতে তুলে দিয়েছে। ড্রোনটি বর্তমানে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, ড্রোনটি চীনে নির্মিত এবং তাতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা সংযুক্ত রয়েছে। নিখুঁত নজরদারির জন্য তা ব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিএসএফ-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা এই ড্রোনটি নজরদারির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছি। আগরতলা বিমানবন্দরের নিকটবর্তী এবং স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এ ধরনের ঘটনা নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চিন্তার বিষয় বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই সম্ভাব্য হুমকি উপেক্ষা করা হচ্ছে না। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ওই ড্রোনটি ধানক্ষেতে পরে গেছে, এমনটাই অনুমান করছেন তিনি।
এদিকে, ড্রোন উদ্ধারের দিনেই নয়াদিল্লিস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোঃ রিয়াজ হামিদুল্লা ত্রিপুরা সফর চলাকালীন আগরতলা চেকপোস্ট পরিদর্শন করেছেন। এই সফর ও ড্রোন উদ্ধারের সময়কাল নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
একই সঙ্গে সম্প্রতি একাধিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর এজেন্ট ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। এই তথ্য ও সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি ড্রোনের উপস্থিতি মিলিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে।
আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সীমান্তে নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই জোরদার করা হয়েছে। বিএসএফ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় বাহিনী সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে এবং ত্রিপুরা পুলিশকেও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজকের ড্রোন উদ্ধারের ঘটনায় লঙ্কামুড়া সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল এই ড্রোনটি কোথা থেকে উড়ে এল এবং তার উদ্দেশ্য কী ছিল? তদন্তকারী সংস্থাগুলির রিপোর্টের অপেক্ষায় গোটা প্রশাসন।

