গভীর নিম্নচাপ রাইদিঘির কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে, জারি রয়েছে সতর্কতা

নয়াদিল্লি, ২৯ মে : উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার সকালে ঘণ্টায় প্রায় ২২ কিমি বেগে উত্তর অভিমুখে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়া (বাংলাদেশ)-এর মধ্যবর্তী অঞ্চল, রাইদিঘির একেবারে কাছে দিয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে। এটি আজ ২৯ মে সকাল ১১:৩০টার সময় ২২.০° উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮.৪° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর অবস্থান করছিল, যা ক্যানিং থেকে ৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা (বাংলাদেশ) থেকে ১৩০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং খেপুপাড়া থেকে ১৯০ কিমি পশ্চিমে দূরত্বে রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই গভীর নিম্নচাপ উত্তর-উত্তরপূর্বাঞ্চলের দিকে এগোবে এবং আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপ হিসেবেই থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে।

২৯ ও ৩০ মে অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ, উপ-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত; কিছু কিছু স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী এবং বিচ্ছিন্নভাবে অতিভারী (২০ সেমি পর্যন্ত) বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৯ মে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় কিছু স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত (৭-২০ সেমি) হতে পারে।

এদিকে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলজুড়ে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিমি দমকা হাওয়া ঘণ্টায় ৭০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে হাওয়ার গতি কমে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি হতে পারে। ওড়িশা উপকূলে ৩০ মে পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি দমকা হাওয়া চলবে। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলিতে আজ দুপুর থেকে ৩০ মে সকাল পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪৫-৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে ২৯-৩০ মে পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।

২৯-৩০ মে উত্তর ও কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্র উত্তাল থেকে খুবই উত্তাল থাকবে। ওই সময়ে মৎস্যজীবীদের উত্তর ও কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগরে এবং ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উত্তর-পূর্ব রাজ্য, উপ-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে সম্ভাব্য সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছু পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ঝড়ো হওয়া এবং ভারি বৃষ্টিপাতে গাছপালা ও ছোট গাছ উপড়ে পড়া (বিশেষত কলা, পেঁপে, সজনে), উদ্যানপালন ও চাষের ক্ষতি, দুর্বল ঘরবাড়ি ও কাঁচা রাস্তার আংশিক ক্ষতি, হালকা বস্তু বাতাসে উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, রাস্তাঘাট, রেলপথে বিঘ্ন ঘটা, ভূমিধস, জলাবদ্ধতা, নিম্নাঞ্চলে বন্যা, দৃষ্টিসীমা হ্রাস পেতে পারে ভারী বৃষ্টির কারণে এবং হেলিকপ্টার পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।

তাই, প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরে যান, বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকলে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দিন এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী বস্তু থেকে দূরে থাকুন, গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না এবং পর্যটন ও সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রিত করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর

২৯ মে সকাল ৮:৩০ পর্যন্ত ওড়িশায় লাঞ্জিগড়ে ১০ সেমি, চিলকায় ৮ সেমি, কৃষ্ণপ্রসাদ, গঞ্জাম, বেগুনিয়া এবং অঙ্গুলে ৭ সেমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। অসম ও মেঘালয়ের কোকরাঝাড় ও ধুপধারায় ৮ সেমি এবং ঘর্মুরা ও বহলপুরে ৭ সেমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এদিকে, উত্তর-পূর্ব রাজ্যের চান্দেলে ৮ সেমি, উপ-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের লাভা (দার্জিলিং ও কালিম্পং)-তে ৭ সেমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।