জয়পুর : সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সোনা-রূপার কণিকা তুলতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে মর্মান্তিক মৃত্যু চার শ্রমিকের

জয়পুর, ২৭ মে : রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে একটি জুয়েলারি কারখানার সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সোনা ও রূপার কণিকা তুলতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে চার শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আরও চারজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোমবার জয়পুরের সীতাপুরা শিল্প এলাকার ‘আচল জুয়েলস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক কোম্পানির জি-ব্লকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি সাঙ্গানের সদর থানা এলাকার অন্তর্গত। কোম্পানিটির মালিক অরুণ কুমার কোঠারি এবং সিইও বিকাশ মেহতা। নিহত শ্রমিকদের দেহ মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত দুই শ্রমিক অজয় চৌহান এবং রাজপাল বর্তমানে আরইউএইচএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকী দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, সেপটিক ট্যাঙ্কটি প্রায় ১০ ফুট গভীর ছিল এবং সেখানে সোনা ও রূপার কণিকা জমে ছিল। প্রথম একজন শ্রমিক ট্যাঙ্কে নামার পরই অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে বাকিরাও ট্যাঙ্কে নামেন এবং বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হন। মোট আটজন শ্রমিক ওই ট্যাঙ্কে নেমেছিলেন।

ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, তবে এখনো পর্যন্ত ট্যাঙ্কে থাকা নির্দিষ্ট গ্যাসটির প্রকৃতি জানা যায়নি। স্থানীয় প্রশাসনের এডিএম সাউথ, এসডিএম সাঙ্গানের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছে। সূত্র অনুযায়ী, মূলত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ট্যাঙ্কে প্রবেশে অস্বীকৃতি জানালে কোম্পানি অন্য শ্রমিকদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিকের লোভ দেখিয়ে কাজটি করায়।

নিহত ও আহত শ্রমিকরা সবাই উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর এবং আম্বেদকর নগর জেলার বাসিন্দা। তারা ২০২৩ সাল থেকে একটি ঠিকাদারের মাধ্যমে এখানে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, ঠিকাদার মুকেশ পাল-এর ভাইও নিহতদের মধ্যে রয়েছেন। শ্রমিকরা সবাই সীতাপুরার গোবর্ধন নগরে থাকতেন। এই ঘটনার পর প্রশাসন একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে। এতে শ্রমিক নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন এবং কোম্পানি ও ঠিকাদারের গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারখানার জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।