নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে একজন শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন মামলায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির উপর কোনও শাস্তি আরোপ করা হবে না। বিচারপতি অভয় এস ওকা ও উজ্জ্বল ভূঞ্যানের বেঞ্চ সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে এই রায় দেয়।
ঘটনার সময় অভিযুক্তের বয়স ছিল ২৪ বছর এবং তিনি এক নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন বলে দোষী সাব্যস্ত হন। পরবর্তীতে সেই কিশোরী প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাঁকে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে দম্পতি তাঁদের সন্তানের সঙ্গে একত্রে বসবাস করছেন।
ভুক্তভোগীর বর্তমান মানসিক অবস্থা ও সামাজিক পরিস্থিতি বিচার করতে মনোবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানী সহ এক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির পর্যবেক্ষণ আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করে, সমাজ তাকে বিচার করেছে, আইন ব্যবস্থা তাকে ব্যর্থ করেছে এবং নিজের পরিবারও তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, “যদিও আইন অনুযায়ী ঘটনাটি একটি অপরাধ, ভুক্তভোগী সেটিকে অপরাধ হিসেবে ভাবেননি। তার আসল ট্রমা ঘটনার ফলে নয়, বরং এরপর যা কিছু তাকে সহ্য করতে হয়েছে – পুলিশ, আদালত, এবং দোষীকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ক্রমাগত সংগ্রাম – সেটাই ছিল তার জন্য আসল যন্ত্রণা। এই মামলার বাস্তবতা আমাদের সকলের চোখ খুলে দেয়।”
আদালত জানিয়েছে, এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে — যেখানে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের মধ্যে আবেগের বন্ধন ও তাদের বর্তমান পারিবারিক জীবনের কথা বিবেচনা করে — সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে “সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার” প্রদানের জন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এই রায় কেবল এক ব্যক্তির বিচার নয়, বরং নৈতিকতা, সমাজ, পরিবার ও আইন ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা নিয়ে এক গভীর আত্মবিশ্লেষণের উপলক্ষ তৈরি করল।

