ওয়াশিংটন, ২১ মে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘গোল্ডেন ডোম’-এর পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই উচ্চপ্রযুক্তি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আগামী তিন বছরের মধ্যে চালু হবে এবং এটি তার বর্তমান শাসনকালেই সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, “নির্বাচনী প্রচারে আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম অত্যাধুনিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম গড়ে তুলব। আজ আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে, আমরা এই অত্যাধুনিক সিস্টেমের স্থাপত্য চূড়ান্ত করেছি।”
‘গোল্ডেন ডোম’ একটি যুগান্তকারী মিসাইল শিল্ড যা স্থল, সমুদ্র এবং মহাকাশ থেকে পরিচালিত হবে। এটি একাধিক ধাপে ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত, অনুসরণ এবং ধ্বংস করতে সক্ষম হবে— এমনকি উৎক্ষেপণের আগেও। এটি ব্যালিস্টিক, ক্রুজ, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিরোধে সক্ষম, হোক তা পারমাণবিক কিংবা প্রচলিত অস্ত্রে সজ্জিত।
ট্রাম্প জানান, গোল্ডেন ডোম-এর পরিকাঠামো মহাকাশ-ভিত্তিক সেন্সর ও ইন্টারসেপ্টর দিয়ে তৈরি হবে এবং এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যাতে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা যায়।
প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পে $২৫ বিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তবে কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের মতে প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় $৫০০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, প্রকল্পটির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে প্রায় $১৭৫ বিলিয়ন ব্যয় হতে পারে এবং এর ব্যয় ২০ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে গ্রহণ করা হবে।
মার্কিন স্পেস ফোর্স-এর চার-তারকা জেনারেল মাইকেল গেটলাইন এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি এর আগে ৩০ বছরেরও বেশি সময় মার্কিন বিমান বাহিনীতে কাজ করেছেন এবং মহাকাশ ও মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষজ্ঞ।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি কানাডাও এই সিস্টেমে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প বলেন, “তাদেরও নিরাপত্তা দরকার।”
গোল্ডেন ডোম-এর নামটি ইসরায়েলের সফল ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনুপ্রাণিত। ইসরায়েলের সিস্টেমটি ছোট পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত হলেও, মার্কিন গোল্ডেন ডোম আরও বিস্তৃত ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন।
রাশিয়া ও চীন এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, এটি মহাকাশকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’-এ পরিণত করতে পারে এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানায়, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহাকাশে যুদ্ধের সম্ভাব্য অস্ত্রাগার অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।”
2025-05-21

