মাতৃভাষা সুরক্ষা দিবস উদ্‌যাপন ধর্মনগরে

ধর্মনগর, ১৯ মে: আজ সকাল ১১টায় ধর্মনগর বিবেকানন্দ সার্ধশতবার্ষিকী ভবনে ঘটা করে পালিত হলো মাতৃভাষা সুরক্ষা দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি উদ্‌যাপিত হলো যথাযোগ্য মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক আবহে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উপ-অধিকর্তা রিপন চাকমা, উত্তর জেলার সভাধিপতি অর্পণা, শিক্ষা দপ্তরের ওএসডি কৃতিসুন্দর দে, ধর্মনগর পৌর পরিষদের চেয়ারপার্সন সহ বিশিষ্টজনেরা।

এছাড়াও নানা সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরাও ছিলেন অনুষ্ঠানে।অনুষ্ঠানের সূচনা হয় প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন। এরপর ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় ১৯৬১ সালে আসামের বরাক উপত্যকায় মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলনরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া ১১ জন শহিদকে। তাঁদের উদ্দেশে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।

উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের শিল্পীবৃন্দ। সকালবেলায় আয়োজিত হয় “বসে আঁকো” প্রতিযোগিতা, যেখানে ৫৫-৬০ জন শিশু অংশগ্রহণ করে। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় কবিতা পাঠ প্রতিযোগিতা, যাতে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে ২৭ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। বিকেলে ধর্মনগরের ১০টি সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় মঞ্চে উঠে আসে নৃত্য ও সংগীতের এক অপূর্ব আবহ।

অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন অনুষ্ঠানে বলেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হল মা। মা ছাড়া এই পৃথিবীতে কেউ নেই। যাঁদের মা নেই, তারাই জানেন এই ব্যথা কতটা গভীর। আর মাতৃভাষা মানে মাতৃস্বরূপা ভাষা—তার সুরক্ষা আমাদের কর্তব্য।” তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের মঞ্চে ডেকে নিয়ে উৎসাহ প্রদান করেন এবং ভালোবাসা জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানজুড়ে মাতৃভাষার গুরুত্ব, ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রসারে নানা বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। সার্বিকভাবে এটি ছিল এক আবেগঘন ও অর্থবহ দিন, যেখানে ধর্মনগরের মানুষ ভাষার প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করলেন সম্মিলিতভাবে।