কৈলাস মানস সরোবর যাত্রাকে সামনে রেখে নাথু লা পাসে পরিকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করল সিকিম সরকার

গ্যাংটক, ১৮ মে: বহু প্রতীক্ষিত কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা আবার শুরু হওয়ার আগে সিকিম সরকারের তরফে নাথু লা পাস অঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ জোরকদমে চলছে। এই হিমালয় পার্বত্য পথ সিকিমকে চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

পাঁচ বছর পর ফের শুরু হতে চলেছে এই তীর্থযাত্রা, যা হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে। যাত্রীদের সুবিধার্থে গ্যাংটক ও নাথু লার মধ্যে দুটি ‘অ্যাক্লিমেটাইজেশন সেন্টার’ (উচ্চতায় মানিয়ে নেওয়ার কেন্দ্র) তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, কার্যকর শৌচাগারসহ অন্যান্য ভ্রমণ-সহায়ক পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাবি-লুংচক কেন্দ্রের বিধায়ক থিনলে ছেরিং ভুটিয়া।

ভুটিয়া জানান, তিনি নিজের কেন্দ্রের অন্তর্গত নাথু লা পাস সংলগ্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং সেখানে মানস সরোবর যাত্রীদের জন্য সুবিধা বৃদ্ধির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেছেন। বন, পর্যটন ও পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, আগামী জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে দু’টি পথ দিয়ে এই তীর্থযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে — উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস এবং সিকিমের নাথু লা পাস। প্রতিটি ব্যাচে ৫০ জন করে যাত্রী থাকবেন। সিকিম পথে মোট ১০টি ব্যাচ যাবে বলে জানানো হয়েছে।

ভুটিয়া বলেন, “সিকিম একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্য, যা নাথু লা পথের অন্যতম বিশেষত্ব। এখানে উন্নত রাস্তা ও পরিকাঠামো থাকার ফলে যাত্রীরা নিরাপদ ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।”

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এই যাত্রা স্থগিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার কারণে তা বন্ধ ছিল। তবে, গত বছর অক্টোবর মাসে ডেমচক ও ডেপসাং অঞ্চলে সেনা পিছিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর জানুয়ারি মাসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বেইজিং সফর করেন এবং চীনের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান উইদং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই দুই দেশ কাইলাশ মানস সরোবর যাত্রা ফের চালু করতে সম্মত হয় এবং পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে মানুষকেন্দ্রিক পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়।

ভুটিয়া আরও বলেন, তিনি ও সরকারি প্রতিনিধিরা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেছেন এবং পরবর্তী উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত খসড়া তৈরি করে তা পর্যটন দপ্তরে জমা দেবেন।