ইম্ফল, মে ১৮: মণিপুর পুলিশ এবার মাদক, অস্ত্র কিংবা বিরল প্রাণীর পর অবৈধ ময়ূরের পালকের চালান আটক করে নতুন চমক দিল। রোববার মণিপুর পুলিশ জানায়, মিয়ানমারে অবৈধভাবে ময়ূরের পালক পাচারের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শরীফুদ্দিন (২৪), যিনি টেংনৌপাল জেলার সীমান্ত শহর মোরেহর বাসিন্দা। পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, শরীফুদ্দিন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বিপুল পরিমাণ ময়ূরের পালকের শাফ্ট (shaft) মিয়ানমারে পাচার করছিলেন। তার কাছ থেকে চারটি প্লাস্টিকের বস্তায় মোট ১৮টি বান্ডিল করে মোট ৭২,০০০টি পালক উদ্ধার করা হয়েছে, যার ওজন প্রায় ১৪২ কেজি। এছাড়াও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে এই পালকগুলোর আনুমানিক মূল্য ৩৭ লক্ষ টাকা। সাধারণত ৩৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-মিয়ানমার অনিরাপদ সীমান্ত দিয়ে মাদক, অস্ত্র, ও বিরল প্রাণী পাচার হওয়ার ঘটনা সামনে এলেও, এই প্রথম ময়ূরের পালক পাচারের ঘটনা ধরা পড়ল।
ভারত-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট (ICP) মোরেহ, ইম্ফল শহর থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক পথ হিসেবে পরিচিত। মোরেহ-তামু সীমান্তপথ, যা বর্তমানে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে একমাত্র কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য স্থলপথ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২০১৮ সালে প্রায় ৭২.৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে গঠিত ICP মোরেহ ৪৫.৫৮ একর জমির উপর বিস্তৃত। এটি প্রস্তাবিত ১,৩৬০ কিমি দীর্ঘ ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিদেশীয় মহাসড়কের অংশ। মোরেহের ভারত-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের সাগাইং বিভাগের কালেও শহরকে যুক্ত করে।
প্রসঙ্গত, ১,৬৪৩ কিমি দীর্ঘ সীমান্তে মিয়ানমার ভারতের চারটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য — অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে। এই অঞ্চলটি হেরোইন ও ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নানা মাদকের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত।

